বাংলাদেশের পক্ষে বৈঠকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম, আর তুরস্কের পক্ষে রয়েছেন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বেরিস একিনচি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষণ সহযোগিতা, জনশক্তি রপ্তানি, শিক্ষাবিনিময় এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
এক কর্মকর্তা বলেন,
“পাঁচ বছর পর এ ধরনের উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখানে দুই দেশের সম্পর্কের সব দিক নিয়েই আলোচনা হবে, বিশেষ করে অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা প্রাধান্য পাবে।”
তুর্কি প্রতিনিধিদলের সফরসূচি:
তুরস্কের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বেরিস একিনচি সোমবার (৬ অক্টোবর) ঢাকায় পৌঁছান। আগমনের পরদিনই তিনি বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নেতাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন।
এছাড়া আজ তিনি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন।
পটভূমি ও কূটনৈতিক তাৎপর্য:
বাংলাদেশ ও তুরস্কের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের ঐতিহাসিক বন্ধনের ওপর দাঁড়ানো। উভয় দেশই মুসলিম বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।
তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কিছুটা শীতল ছিল, বিশেষ করে রোহিঙ্গা সংকট, আঞ্চলিক সামরিক অবস্থান এবং বাণিজ্যনীতি নিয়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এ বৈঠক দুই দেশের সম্পর্ক নতুন করে উষ্ণ করার এক গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের ভাষায়,
“তুরস্ক দক্ষিণ এশিয়ায় তার ভূরাজনৈতিক প্রভাব বাড়াতে চায়, আর বাংলাদেশ চাইছে বহুপাক্ষিক ভারসাম্য। সেই প্রেক্ষাপটে এ বৈঠক কেবল কূটনৈতিক নয়, কৌশলগতভাবেও তাৎপর্যপূর্ণ।”
বিশ্লেষণ:
এই বৈঠককে অনেকে “দুই দেশের সম্পর্ক পুনর্গঠনের মোড় ঘোরানো মুহূর্ত” হিসেবে দেখছেন।
একদিকে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক অর্থনৈতিক ভারসাম্যে ভূমিকা বাড়াতে চাইছে, অন্যদিকে তুরস্ক মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নতুন কৌশলগত মিত্র খুঁজছে।
সেক্ষেত্রে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এই আলোচনা শুধুমাত্র কূটনৈতিক নয়— ভবিষ্যৎ আঞ্চলিক জোট ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার দিকেও ইঙ্গিত দেয়।
পাঠকের মন্তব্য