গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে বলে দাবি করেছে ব্রিটিশ দৈনিক ফিনান্সিয়াল টাইমস। গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত তাদের প্রামাণ্যচিত্রের শিরোনাম ছিল “বাংলাদেশের হারানো বিলিয়নস: চোখের সামনেই লুট”।
ডকুমেন্টারিতে দেখানো হয়, আন্দোলনকারী, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে অনুসন্ধান চালানো হয়েছে—কীভাবে বিপুল অর্থ পাচার হলো এবং তা ফেরত আনার সুযোগ কতটা রয়েছে। প্রামাণ্যচিত্রের শুরুতেই শেখ হাসিনার নাটকীয় ক্ষমতাচ্যুতির প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়।
তাতে বলা হয়, অর্থ পাচার হয়েছে মূলত অতিরিক্ত বা কম ইনভয়েসিং, হুন্ডি-হাওয়ালা ও যুক্তরাজ্যে সম্পত্তি কেনাবেচার মাধ্যমে। বিশেষ করে লন্ডনকে বাংলাদেশের পাচারকৃত অর্থের প্রধান গন্তব্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
প্রতিবেদনে শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানার পরিবারের সদস্যদের নামসহ প্রাক্তন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থপাচারের অভিযোগ উল্লেখ করা হয়।
লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোশতাক খান বলেন, শেখ হাসিনার আমলে দুর্নীতি গোপন কোনো বিষয় ছিল না, বরং তা ছিল প্রকাশ্য। অর্থনীতিবিদ ইফতি ইসলাম একে “সম্ভবত বিশ্বের ইতিহাসে কোনো দেশের সবচেয়ে বড় অর্থপাচার” বলে অভিহিত করেছেন।
ফিনান্সিয়াল টাইমসের সাংবাদিক সুজানাহ স্যাভেজের মতে, অর্থ লুট হওয়া জানা বিষয়, কিন্তু তা ফেরত আনা অনেক বেশি জটিল। এজন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অপরিহার্য হবে।
ডকুমেন্টারির শেষাংশে ছাত্রনেত্রী রাফিয়া রেহনুমা হৃদি সতর্ক করে বলেন, “আমাদের সবচেয়ে বড় ভয় হলো, আমরা হয়তো আমাদের শহীদদের প্রতি দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারবো না।”
পাঠকের মন্তব্য