অবশেষে শেষ হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ভোট গণনা। প্রায় ৪০ ঘণ্টা টানা কাজ শেষে শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টা ২০ মিনিটে নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক লুৎফুল এলাহী ভোট গণনা সমাপ্তির ঘোষণা দেন।
শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ প্রতীক্ষা
এই দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষার্থীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন চূড়ান্ত ফলাফলের জন্য। টানা তৃতীয় দিনের মতো ভোট গণনা চলতে থাকায় অনেকে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে জানান, সন্ধ্যা ৭টার মধ্যেই পূর্ণাঙ্গ ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
ভোট গণনার ধাপ
শনিবার সকাল ১০টার দিকে কমিশনার লুৎফুল এলাহী জানান, তখন পর্যন্ত ২১টির মধ্যে ১৫টি হলের ভোট গণনা শেষ হয়েছে। দুপুরের মধ্যে বাকি ৬টি হলের গণনাও শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন তিনি।
পরে দুপুর ১১টার মধ্যে ১৬টি হলের গণনা সম্পন্ন হয় এবং বাকি ৫টির কাজ চলমান থাকে। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় ভোটও গণনা করা হচ্ছিল।
হাতে ব্যালট গোনার সিদ্ধান্ত
প্রথমে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, ভোট গণনা হবে আধুনিক ওএমআর মেশিনের মাধ্যমে। কিন্তু সরঞ্জাম সরবরাহ নিয়ে ছাত্রদল ও শিবিরের পারস্পরিক অভিযোগে মেশিনে গণনা সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত হাতে ব্যালট গোনার সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন। এতে ভোট গণনার কাজ জটিল ও দীর্ঘায়িত হয়।
ভোটগ্রহণের প্রেক্ষাপট
এর আগে, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি হলে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোট শেষে সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিভিন্ন হল থেকে ব্যালট বাক্স সিনেট ভবনে নিয়ে আসা হয়। সব প্রস্তুতি শেষে রাত ১০টার পর শুরু হয় গণনা। কিন্তু নানা জটিলতায় টানা তিন দিন ধরে চলে গণনা কার্যক্রম।
মানবিক প্রভাব
শিক্ষার্থীরা জানান, এই বিলম্ব শুধু উদ্বেগই নয়, মানসিক চাপও সৃষ্টি করেছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষায় থাকা শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। তবে অনেকে মনে করেন, ধীর হলেও সুষ্ঠু ভোট গণনা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি আস্থার প্রতিফলন।
পরবর্তী পদক্ষেপ
প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, পূর্ণাঙ্গ ফলাফল প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন জাকসু ও হল সংসদ কার্যক্রম শুরু করবে। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ৩৪ বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার নতুন সূচনা হবে।