গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে টালমাটাল পরিস্থিতি বিরাজ করছে নেপালে। টানা গণ-অভ্যুত্থান ও তরুণ প্রজন্মের (জেন-জি) প্রবল বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন দেশটির কমিউনিস্ট প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি। সরকারের বেশিরভাগ মন্ত্রী আত্মগোপনে বা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। এমন অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে কে নেপালের শাসনভার নেবেন তা নিয়ে চলছিল নানা জল্পনা।
শেষ পর্যন্ত সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতেই তিনি শপথ নেবেন বলে নিশ্চিত করেছে এনডিটিভি ও ইন্ডিয়া টুডে।
কিভাবে এলেন সুশীলা কার্কি সামনে?
প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পৌদেল, সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগদেল ও জেন-জি বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনার পর এ সিদ্ধান্ত হয়। প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা কিরণ পোখরেল জানান, শুক্রবার সকাল থেকে শীতল নিবাসে দীর্ঘ বৈঠকের পর সমঝোতায় পৌঁছানো হয়।
বিক্ষোভকারীরা সংসদ ভেঙে দিয়ে একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের দাবি জানাচ্ছিলেন। কার্কিকে নিয়োগ তাদের দাবির সঙ্গেই সামঞ্জস্যপূর্ণ।
ইতিহাস গড়তে যাচ্ছেন প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী
৭১ বছর বয়সী সুশীলা কার্কি শপথ নেওয়ার মধ্য দিয়ে নেপালের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। তার নেতৃত্বে একটি ছোট মন্ত্রিসভা গঠিত হবে। আজ রাতেই প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় সংসদ ও সাতটি প্রাদেশিক সংসদ ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভের প্রেক্ষাপট
গত মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভের মুখে পতন ঘটে ওলি সরকারের। এরপর সেনাবাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধিদের মধ্যে একাধিক বৈঠক হয়। দীর্ঘ আলোচনার পর শিক্ষার্থীরা সুশীলার নাম প্রস্তাব করেন।
তবে আন্দোলনকারীদের একাংশ সুশীলার বয়স নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন এবং নেপাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক কুলমান ঘিসিংকে বিকল্প হিসেবে সামনে আনেন। আবার কাঠমান্ডুর মেয়র ও তরুণ র্যাপার-রাজনীতিবিদ বলেন্দ্র শাহকেও গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী হিসেবে দেখা হচ্ছিল। কিন্তু শাহ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেন এবং শেষ পর্যন্ত সুশীলা কার্কির প্রতি সমর্থন জানান।
পাঠকের মন্তব্য