বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, “আমি বিশ্বাস করি বিএনপিই একমাত্র দল যারা দেশকে রক্ষা করতে পারবে। এজন্য দলের নেতাকর্মীদের অতীতের মতো ভবিষ্যতেও ঐক্যবদ্ধ ও সতর্ক থাকতে হবে।”
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে জিয়া পরিষদ অগ্রণী ব্যাংক পিএলসির উদ্যোগে আয়োজিত “১৫ বছরের ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন সংগ্রাম ও ২৪ গণঅভ্যুত্থান” শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
দুদু অভিযোগ করে বলেন, শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীরা সীমাহীন লুটপাটের মাধ্যমে ব্যাংক সেক্টরকে ধ্বংস করে ফেলেছে। তিনি উল্লেখ করেন, পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার প্রতিশ্রুতি বর্তমান সরকারপ্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস দিয়েছেন। আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে তার ভাবমূর্তির কারণে জনগণের বিশ্বাস আছে যে তিনি অন্তত কিছু অর্থ ফেরত আনতে পারবেন।
বিএনপি নেতা আরও বলেন, দেশে একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করা গেলে বিদেশে পাচার হওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা বিএনপির নেতৃত্বে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান পরীক্ষিত নেতা হিসেবে প্রমাণ দিয়েছেন। তাদের নেতৃত্বে সরকার গঠিত হলে দেশের অর্থ ফেরত আনা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তিনি দাবি করেন, স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে বিরোধী প্রার্থীদের বিজয় ছিনিয়ে নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের জয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল। আর শেখ হাসিনা সেই ধারাকেই অনুসরণ করে ২০০৮ সালের পর থেকে জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন।
দুদু বলেন, গণতন্ত্র মানেই সুষ্ঠু নির্বাচন। কিন্তু গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনা সেই নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস করেছেন। গণহত্যা, ব্যাংক লুটপাট ও ভোটচুরির দায়ে তাকে জবাবদিহি করতে হবে। তিনি আরও বলেন, “শেখ হাসিনা গত ১৫ বছর ধরে যা করেছে, তাতে আসলে তিনি বাংলাদেশ স্বাধীনতাকে অস্বীকার করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রধান বিষয় ছিল স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র। সেই গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার কারণে, ভোটচুরি, গণহত্যা ও ব্যাংক ডাকাতির জন্য তার ফাঁসি হওয়া উচিত।”
দুদু খালেদা জিয়াকে গণতন্ত্রের প্রতীক আখ্যা দিয়ে বলেন, তিনি বারবার নির্যাতন সহ্য করেছেন, কিন্তু প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কখনো কটূক্তি করেননি। একইভাবে তারেক রহমানও দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে নিজেকে পরীক্ষিত নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মো. সুজাউদ্দৌলা। এতে উপস্থিত ছিলেন উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, জনতা ব্যাংকের পরিচালক মো. ওবায়দুল হক, অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালক মোহাম্মদ সুলতান মাহমুদ, কৃষকদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক এস কে সাদি এবং দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন।
পাঠকের মন্তব্য