হিজরি ১৪৪৭ সালের ১২ রবিউল আউয়াল আজ। দেশজুড়ে যথাযথ ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)।
আরব সমাজের ‘আইয়ামে জাহেলিয়া’ বা অন্ধকার যুগ থেকে মানবজাতিকে মুক্তি ও আলোর পথ দেখাতে মহান আল্লাহ তায়ালা এ দিনেই রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে পৃথিবীতে শেষ নবী ও রাসূল হিসেবে প্রেরণ করেন। তাঁর জীবনাদর্শ বা সুন্নাহ হয়ে ওঠে ইসলামের মূল ভিত্তি ও মুসলিম উম্মাহর পথের দিশারি।
৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে মক্কার কুরাইশ বংশের সম্ভ্রান্ত পরিবারে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আব্দুল্লাহ তাঁর জন্মের আগে ইন্তেকাল করেন, আর ছয় বছর বয়সে মা আমিনাকেও হারান। পরে দাদা আব্দুল মুত্তালিব ও চাচা আবু তালিবের আশ্রয়ে বড় হন তিনি। ২৫ বছর বয়সে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন সম্ভ্রান্ত নারী খাদিজা (রা.)-এর সঙ্গে।
অল্প বয়স থেকেই মহানবী (সা.) হেরা গুহায় ধ্যানে মগ্ন থাকতেন। ৬১০ খ্রিষ্টাব্দে ফেরেশতা জিবরাইল (আ.) তাঁর কাছে প্রথম ওহি নিয়ে আসেন। এরপর মৃত্যু পর্যন্ত তিনি আল্লাহর বাণী প্রচার ও ইসলাম প্রতিষ্ঠায় অবিচল ছিলেন। ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে, অর্থাৎ ১২ রবিউল আউয়ালই, ৬৩ বছর বয়সে তিনি ইন্তেকাল করেন।
প্রতি বছরের মতো এবারও দিবসটি উপলক্ষে দেশব্যাপী আয়োজন করা হয়েছে দোয়া মাহফিল, ওয়াজ, আলোচনা ও শোভাযাত্রা। রাজধানী ঢাকার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে পক্ষকালব্যাপী কর্মসূচি শুরু হয়েছে। ৫ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন হওয়া এ অনুষ্ঠান চলবে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এতে দেশবরেণ্য আলেম-ওলামারা বয়ান করবেন। একই সঙ্গে মাসব্যাপী ইসলামি বইমেলারও আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে দেশ-বিদেশের প্রায় দুই শতাধিক স্টল অংশ নেবে।
দিবসটি উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশবাসী ও সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মহানবী (সা.)-এর অনুপম জীবনাদর্শ, সর্বজনীন শিক্ষা ও সুন্নাহ অনুসরণ আজকের দ্বন্দ্ব-সংঘাতময় বিশ্বে শান্তি, ন্যায় ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে পারে।
চট্টগ্রামে আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের আয়োজনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ‘জশনে জুলুস’-এর ৫৪তম আয়োজনও আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শোভাযাত্রায় লাখো মানুষ অংশ নিচ্ছেন।
পবিত্র দিনটি শান্তিপূর্ণভাবে পালনের লক্ষ্যে সরকার সারাদেশে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। শুধু দেশে নয়, বিদেশে বাংলাদেশের মিশন, দূতাবাস ও হাইকমিশনেও ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) যথাযথ মর্যাদায় পালন করা হচ্ছে।
পাঠকের মন্তব্য