বেইজিংয়ের তিয়েনআনমেন চত্বরে সামরিক কুচকাওয়াজের আগে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে ঘটে গেল এক ভিন্নধর্মী আলাপ। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের মাইক্রোফোনে ধরা পড়ে তাদের আলোচনায় উঠে আসে মানব জীবনের স্থায়িত্ব, চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নয়ন এবং ভবিষ্যতে মানুষের দীর্ঘায়ু কিংবা ‘অমরত্বের’ সম্ভাবনা। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
লাল গালিচায় ঐতিহাসিক মুহূর্তে শি জিনপিংয়ের পাশে ছিলেন ভ্লাদিমির পুতিন এবং অন্য পাশে উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। তিন নেতা কুচকাওয়াজের আগে হাত মেলালেন, হাসিমুখে একে অপরের সঙ্গে কথা বললেন এবং ছবি তুললেন। এ সময় ক্যামেরায় ধরা পড়ে তাদের অপ্রত্যাশিত ও মানবিক আলাপচারিতা।
চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম সিসিটিভির ফুটেজে শি জিনপিংকে বলতে শোনা যায়, “আজকাল… ৭০ বছর বয়স।” এরপর পুতিনের প্রতিক্রিয়া অনুবাদ করে শি’কে জানানো হয়। পুতিন বলেন, “বায়োপ্রযুক্তির উন্নতির কারণে মানবদেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপন এখন সম্ভব। যেভাবে আগে বয়স বাড়তে থাকতো, এখন সেই ধারা কমানো সম্ভব হচ্ছে। এমনকি মানবজাতি ‘অমরত্ব’ অর্জনের স্বপ্নও দেখতে পারে।”
শি জিনপিং আরও যোগ করেন, “গবেষণায় পূর্বাভাস রয়েছে, চলতি শতাব্দীতে মানুষ ১৫০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারবে।”
পরে সংবাদ সম্মেলনে এ আলোচনা নিশ্চিত করেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। তিনি বলেন, “হ্যাঁ, যখন আমরা কুচকাওয়াজ দেখতে যাচ্ছিলাম, চেয়ারম্যান (শি) এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছিলেন। স্বাস্থ্য, চিকিৎসা এবং অঙ্গ প্রতিস্থাপনের আধুনিক প্রযুক্তি মানুষের আয়ু আরও দীর্ঘায়িত করতে পারে। ভবিষ্যতে সক্রিয় জীবনের সময়কালও বাড়বে।”
বর্তমানে দুই নেতার বয়সই ৭২। কিন্তু তারা কেউই শিগগির অবসর নেওয়ার কোনো ইঙ্গিত দেননি। বরং তাদের নেতৃত্ব আন্তর্জাতিক রাজনীতির ভারসাম্যে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। উল্লেখ্য, শি জিনপিংয়ের দুই পূর্বসূরি জিয়াং জেমিন ও হু জিনতাও উভয়ই দশ বছর ক্ষমতায় থেকে অবসর নেন। তবে শি ২০১৮ সালে সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতা সরিয়ে দেন। এরপর ২০২৩ সালে তিনি আবারও নতুন মেয়াদে ক্ষমতায় নির্বাচিত হন।
এই মানবিক আলাপ কেবল দুই নেতার ব্যক্তিগত মতামত নয়; বরং মানবসভ্যতার ভবিষ্যৎ, চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতি এবং দীর্ঘায়ু জীবনযাপনের সম্ভাবনা নিয়েও নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে বিশ্বকে।
পাঠকের মন্তব্য