পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরানো ও তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। দীর্ঘদিন ধরে বহাল থাকা মিউচুয়াল ফান্ড বিধিমালা ২০০১ বাতিল করে কমিশন নতুনভাবে “বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (মিউচুয়াল ফান্ড) বিধিমালা, ২০২৫” এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৯৬৯তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নতুন বিধিমালা তৈরি হয়েছে মূলত বিনিয়োগকারীদের অধিকার সুরক্ষা, স্বচ্ছতা বৃদ্ধি এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যকে সামনে রেখে।
বিএসইসি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, এই নতুন বিধিমালায় মিউচুয়াল ফান্ড পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত গুরুত্বপূর্ণ পক্ষগুলো— যেমন ট্রাস্টি, হেফাজতকারী ও সম্পদ ব্যবস্থাপক— এর দায়িত্ব ও কর্তব্য আরও সুস্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা আরও বেশি সুরক্ষিত হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দীর্ঘদিনের পুরোনো বিধিমালা পরিবর্তন করে আধুনিক বাস্তবতার আলোকে নতুন কাঠামো আনার ফলে বাজারে বিশ্বাসযোগ্যতা ও আস্থার পরিবেশ তৈরি হবে। এতে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে বড় ইউনিটহোল্ডাররা নিজেদের নিরাপদ মনে করবেন।
কমিশন জানায়, বিনিয়োগকারীদের মতামত ও প্রস্তাবকে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য খসড়া বিধিমালা জনমত যাচাইয়ের লক্ষ্যে বিএসইসির ওয়েবসাইট ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশ করা হবে। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও তাদের অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ জানানোর সুযোগ পাবেন।
বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে অতীতে নানা সংকটের কারণে সাধারণ মানুষ প্রায়ই হতাশ হয়েছেন। অনেক ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী জীবনের সঞ্চয় হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এবার সেই আস্থা ফিরিয়ে আনাই বিএসইসির প্রধান লক্ষ্য। নতুন বিধিমালা কার্যকর হলে অসাধু ব্যবস্থাপনার সুযোগ কমে আসবে এবং বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘমেয়াদে লাভবান হবেন।
পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের সুপারিশ অনুযায়ী এই বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। অর্থনীতিবিদদের মতে, এটি শুধু আইনি পরিবর্তন নয়; বরং একটি মানবিক পদক্ষেপ, কারণ এটি হাজারো বিনিয়োগকারীর ভবিষ্যৎ সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি বহন করে।
পাঠকের মন্তব্য