অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, দুর্নীতি ও অপচয়ের কারণে দেশের সীমিত সম্পদ সঠিকভাবে ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রকল্পগুলো নির্ধারিত সময়ে শেষ হয় না, ব্যয়ও বাড়ে। তিনি বললেন, আমাদের কিছু প্রাকৃতিক গ্যাস ছিল, তা এখন ফুরিয়ে আসছে।
শনিবার চট্টগ্রামের পতেঙ্গা ডেসপাস টার্মিনালে চট্টগ্রাম-ঢাকা জ্বালানি তেল সরবরাহের পাইপলাইন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, এই পাইপলাইন প্রকল্পটি ২০১৮ সালে শুরু হলেও ২০২০ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল। করোনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিলম্ব হয়েছে। তবে এখন প্রযুক্তিগত উন্নতি ও দেশের স্বল্প সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে এটি সমাপ্ত হয়েছে।
তিনি আরও জানান, দেশীয় প্রকল্প বাস্তবায়নে দুর্নীতি ও অপচয় কমানো গেলে বিপুল জনসংখ্যার জন্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব। এর মাধ্যমে শুধু টাকার সাশ্রয় নয়, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষও নিশ্চিত হবে। ফাওজুল কবির খান বলেন, পেট্রোলিয়াম প্রোডাক্ট আমদানিতে বিড প্রক্রিয়া সম্প্রসারিত হলে বছরে ১৪০০–১৫০০ কোটি টাকা সাশ্রয় সম্ভব হয়েছে।
উপদেষ্টা প্রকল্পের দ্রুত ও সাশ্রয়ী বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভূমিকা প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, সামনের দিনে প্রকল্পগুলোতে নিজস্ব ভ্যালু এডিশন বাড়াতে হবে, ইঞ্জিনিয়ারদের দক্ষ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে এবং অন্য দেশের ঠিকাদারদের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে।
চট্টগ্রাম-ঢাকা জ্বালানি তেল পাইপলাইন প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা পর্যন্ত ২৪৯ দশমিক ৪২ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ পাইপলাইন নির্মিত হয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে গোদনাইল পর্যন্ত পাইপের ব্যাস ১৬ ইঞ্চি, গোদনাইল থেকে ফতুল্লা ১০ ইঞ্চি। নদীর ১৮ মিটার নিচ দিয়ে ৯ কিলোমিটার পাইপলাইন গেছে। প্রতি ঘণ্টায় ডিজেল সরবরাহের ক্ষমতা ৪ লাখ লিটার।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. আমিন উল আহসান সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার ইন চিফ মেজর জেনারেল মু. হাসান-উজ-জামান।