অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দৈনন্দিন কার্যক্রমে অভূতপূর্ব গতি সঞ্চার হয়েছে। গত এক বছরে মন্ত্রণালয় ১,২৮৩টি ফাইল নিষ্পত্তি করেছে, যা আগের সরকারের একই সময়ে নিষ্পত্তিকৃত ৮৩৪টি ফাইলের তুলনায় অনেক বেশি।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল জানান, “আমরা গত বছর ১,২৮৩টি ফাইল নিষ্পত্তি করেছি। এছাড়া, মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দফতর ও সংস্থায় ৩৯১টি আইনগত মতামত দেওয়া হয়েছে, যা আগের বছরের ১৮০টি মতামতের দ্বিগুণেরও বেশি।”
দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ, সরকারি সংস্থাগুলোতে বিস্তৃত আইনগত সহায়তা এবং সত্যায়ন ও নথি যাচাইয়ের মতো জনসেবায় মন্ত্রণালয়ের এই অগ্রগতি বিশেষভাবে প্রশংসিত হচ্ছে। গত এক বছরে ১,৫৯,৫৪৪টি সনদপত্র, হলফনামা ও দলিল সত্যায়িত হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
আইন প্রণয়নে অংশগ্রহণমূলক শাসন নিশ্চিত করতে গত এক বছরে রেকর্ড ১২টি স্টেকহোল্ডার পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাশাপাশি, গুম তদন্ত কমিশন ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ নবগঠিত একাধিক কমিশনকে সেক্রেটারিয়াল সহায়তা প্রদান করেছে মন্ত্রণালয়।
এ সময়ে ৪,৮৮৯ জন সরকারি আইন কর্মকর্তা এবং অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তরে ২৭৪ জন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আপিল বিভাগে ৫ জন বিচারপতি ও হাইকোর্ট বিভাগে ২৩ জন বিচারপতি নিয়োগে সহায়তা করেছে মন্ত্রণালয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের জন্য প্রসিকিউটর ও বিচারক নিয়োগও সম্পন্ন হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ড. রেজাউল করিম জানান, ডিজিটাল রূপান্তরের ক্ষেত্রে বড় অগ্রগতি হয়েছে। বর্তমানে ৫০% ফাইল ‘ডি-ডকুমেন্টস’ নামের ডিজিটাল ফাইল ব্যবস্থাপনা সিস্টেমে প্রক্রিয়াকরণ হচ্ছে। সত্যায়ন সেবা পুরোপুরি অনলাইনভিত্তিক হওয়ায় জনগণ ঘরে বসেই এ সেবা পাচ্ছেন।
এছাড়া, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান চলাকালে সংঘটিত অপরাধের বিচার ত্বরান্বিত করতে একটি বিশেষ প্রসিকিউশন মনিটরিং সেল গঠন করেছে মন্ত্রণালয়। রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এসব মামলার বিচার প্রক্রিয়া নিবিড়ভাবে তদারকি করছে এই ইউনিট, যাতে ভুক্তভোগীরা যথাযথ ন্যায়বিচার পান।
পাঠকের মন্তব্য