ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে এক বৃষ্টিভেজা রাতে, ৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত হলো জুলাই গণ-অভ্যুত্থান উপলক্ষে বহুল প্রতীক্ষিত ড্রোন শো ‘ডু ইউ মিস মি?’। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এই শো, নির্ধারিত সময় সন্ধ্যা ৭:৩০টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বিরূপ আবহাওয়ার কারণে রাত ১১টায় শুরু হয়। ১২ মিনিট স্থায়ী এই প্রদর্শনীতে এক হাজার একশ ড্রোন ব্যবহার করে তুলে ধরা হয় প্রতীকী রাজনৈতিক বার্তা, ব্যঙ্গচিত্র ও প্রতিবাদের আবেগ।
প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রতিবাদ: ড্রোন শো-তে যা যা দেখা গেল
প্রদর্শনীর শুরুতেই আকাশে ভেসে ওঠে একটি হাতের প্ল্যাকার্ড, যেখানে লেখা—
“Do You Miss Me?”
এরপর একে একে ড্রোন শো-তে ফুটে ওঠে রক্তমাখা দাঁতসহ শেখ হাসিনার ব্যঙ্গচিত্র এবং তার হেলিকপ্টারে পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য। নিচে লেখা হয়—
“খুনিকে ছাড়া ভালো আছে বাংলাদেশ।”
‘আয়নাঘর’ ও সরকারের বিরুদ্ধে প্রতীকী চিত্র
প্রদর্শনীতে রাজনৈতিক ও মানবাধিকার ইস্যুতে দৃঢ় বার্তা দেওয়া হয়:
-
একরামুল হত্যাকাণ্ড,
-
আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড,
-
ব্যাংক কেলেঙ্কারিতে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও সালমান এফ রহমানের চিত্র
-
ও সেন্সরশিপে আক্রান্ত জনগণের আওয়াজ।
আয়নাঘরের দৃশ্যে লেখা হয়:
“আয়নাঘরের অন্ধকারে বসে লিখতে হচ্ছে না ‘I Love My Family’।”
এবং একটি আবেগঘন বার্তায় উঠে আসে,
“আব্বু, তুমি কান্না করতেছ যে” — যেন কোনো আরেক একরামের মেয়ে যেন আর না কাঁদে।
শেষ দৃশ্য: আশাবাদ ও ভবিষ্যতের ইঙ্গিত
ড্রোন শো-এর শেষ অংশে ভেসে ওঠে দেশের পতাকা ও বার্তা:
“আমরা জানি ফ্যাসিবাদমুক্ত দেশ পুনর্গঠনে পাড়ি দিতে হবে অনেক পথ!”
“সবাই মিলেই আমরা গড়বো বাংলাদেশ ২.০।”
দর্শকদের প্রতিক্রিয়া
বৃষ্টির কারণে অনেক দর্শক অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করলেও, যারা অপেক্ষা করেছিলেন রাত ১১টা পর্যন্ত, তারা এই ব্যতিক্রমী ও আবেগঘন প্রদর্শনী দেখে প্রশংসায় ভেসেছেন। কেউ কেউ বলেন,
“এটা কেবল একটি শো নয়, এটা একটা শক্ত বার্তা।”
আয়োজনে ছিল আরও
-
দিনব্যাপী ব্যান্ড ও একক শিল্পীদের পরিবেশনা
-
হাজারো দর্শকের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ
-
আবহাওয়ার বৈরিতা সত্ত্বেও ঐতিহাসিক এক রাত্রি
পাঠকের মন্তব্য