![]()
নিজস্ব প্রতিবেদক |
রাজনীতিতে ক্ষমতাকেন্দ্রিক গোষ্ঠীস্বার্থ ও মাফিয়াতন্ত্রের দৌরাত্ম্য বন্ধ না হলে দেশের তরুণ সমাজ ও সাধারণ জনগণের মধ্যে আবারও গণঅভ্যুত্থানের ঢেউ উঠবে— এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সমাজকর্মী নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, “একটি রাষ্ট্র যদি জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে পদদলিত করে কেবল সুবিধাভোগী গোষ্ঠীর খেলার মাঠে পরিণত হয়, তাহলে সে রাষ্ট্রে স্থিতিশীলতা টিকবে না। জনতার ধৈর্যের সীমা যখন পার হয়ে যায়, তখনই শুরু হয় ইতিহাসের বাঁকবদল।”
শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আয়োজিত এক ‘নাগরিক সংলাপে’ বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সংলাপটির আয়োজক ছিল ‘সমতা নাগরিক প্ল্যাটফর্ম’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, যেখানে সমাজের বিভিন্ন পেশার মানুষ—বিশেষ করে তরুণ শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও নাগরিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
গণতন্ত্র নয়, চলছে ক্ষমতার বাণিজ্য
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “আমাদের দেশে এখন যে রাজনীতি চলছে, তা আদর্শনির্ভর নয়, বরং পেশিশক্তি ও পুঁজির ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত একধরনের নব্য মাফিয়াতন্ত্র। রাজনীতিবিদ নয়, ক্ষমতার দালালরাই মূল ফায়দা লুটছে।”
তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচন থেকে শুরু করে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত, এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পর্যন্ত—সব কিছুতে প্রভাব বিস্তার করছে ক্ষমতাসীনদের একটি সীমিত গোষ্ঠী। “এই চক্রটিই প্রকৃত গণতান্ত্রিক সংস্কার বাধাগ্রস্ত করছে,” — বলেন তিনি।
তরুণ প্রজন্মকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান
নাহিদ ইসলাম বলেন, “তরুণ প্রজন্মের ওপর ভর করেই প্রতিবার সমাজ পরিবর্তনের জোয়ার এসেছে। এখন আবার সময় এসেছে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করার, অন্যায় ও মিথ্যার বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে দাঁড়ানোর।”
তিনি আরও বলেন, “জনগণের মুখ বন্ধ রাখতে বা প্রতিরোধ আন্দোলন দমাতে যতই দমনপীড়ন চালানো হোক না কেন, শেষ পর্যন্ত জনগণের জয় অনিবার্য।”
ঐক্যবদ্ধ নাগরিক শক্তির প্রয়োজন
আলোচনায় অন্যান্য বক্তারাও বলেন, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সংকটময় এবং এর উত্তরণে নাগরিক সমাজকে আরও সক্রিয় হতে হবে। বক্তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত, শিক্ষিত তরুণদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে যুক্ত করা, এবং স্থানীয় পর্যায়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দেন।
নাহিদ ইসলামের বক্তব্যকে ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে ইতোমধ্যে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই বলছেন, বর্তমান রাজনৈতিক ব্যবস্থায় গণতান্ত্রিক চেতনা পুনরুদ্ধারে এটি সময়োপযোগী বক্তব্য।