এস এম রিফাত, হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ):
কৃষিকাজে নিবেদিত প্রাণ হয়ে সাফল্যের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার রামপুর গ্রামের মো. আলমগীর। মাত্র ১০২ শতক জমিতে দেশীয় জাতের চাল কুমড়া চাষ করে তিনি আয় করেছেন প্রায় ৪ লাখ টাকা। কৃষিকেই জীবনের মূল পেশা হিসেবে বেছে নিয়ে আলমগীর এখন এলাকাজুড়ে পরিচিত একজন সফল কৃষক।
আলমগীরের বাবা ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা,নাম সৈয়দুজ্জামান। বাবার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার পথে হাঁটেন আলমগীর। আলিম পাশ করে চাকরির সুযোগ পেয়েছিলেন বাংলাদেশ পুলিশে। কিন্তু সেই চাকরি না করে গ্রামে থেকে কৃষিকাজে মন দেন। তার সিদ্ধান্ত এখন শুধু তার নয়,পুরো গ্রামের ভাগ্য বদলে দিচ্ছে।
চলতি বছর রমজানের সময় থেকে আলমগীর তার উৎপাদিত চাল কুমড়া বিক্রি শুরু করেন। দেশীয় জাতের এই কুমড়ার চাহিদা এবং উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় লাভও বেশি হয়। সঠিক পরিচর্যা ও পরিকল্পনার কারণে ফলন হয়েছে ভালো।
আলমগীরের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে একই গ্রামের শফিকুল ইসলাম ৭০ শতাংশ জমিতে চাল কুমড়া চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। এছাড়াও আল আমিন, আলম মিয়া ও নবাব নামের আরও তিনজন কৃষকও চাল কুমড়া চাষ করে লাখ টাকার ওপরে আয় করেছেন। এক সময় যাদের কৃষিকাজে আগ্রহ ছিল না, তারাই এখন এই খাতে বিনিয়োগ করছেন।
এই সফলতার নেপথ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন চরপুমদী ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আলিমুল শাহান। তিনি নিয়মিত কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে চলেছেন এবং চাষাবাদের আধুনিক পদ্ধতি শেখাচ্ছেন। তার উৎসাহেই রামপুর গ্রামের তরুণরা এখন চাষাবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
আলমগীর বলেন,’আমি চাই সবাই কৃষিতে ফিরে আসুক। সঠিক পদ্ধতি ও পরিশ্রম করলে কৃষি দিয়েই স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব।’
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আলিমুল শাহান বলেন,’আলমগীরের মত যুবকরা হচ্ছে দেশের সম্পদ। তারা শুধু নিজেরাই এগিয়ে যাচ্ছে না, অন্যদেরও সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছে। এমন উৎসাহব্যঞ্জক কৃষি উদ্যোক্তাদের সংখ্যা বাড়লে গ্রামীণ অর্থনীতির ভিত আরও মজবুত হবে।