![]()
একীভূত ইসলামী ব্যাংকে জমা নিরাপদ রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগ**
বাংলাদেশে ব্যাংকিং খাতে অনিশ্চয়তা ও আর্থিক স্থিতিশীলতা নিয়ে যখন সাধারণ মানুষ উদ্বেগে, তখন আশার বার্তা দিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি জানান, একীভূত হওয়া সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহকদের আটকে থাকা টাকা আগামী সপ্তাহের মধ্যেই ফেরত দেওয়া শুরু হতে পারে।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সম্মেলন কক্ষে ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশের অগ্রগতি’ শীর্ষক প্রতিবেদনের উপস্থাপনা শেষে গভর্নর এ তথ্য জানান।
ব্যাংক একীভূত প্রক্রিয়া এগোচ্ছে, বাড়ানো হলো গ্যারান্টি
গভর্নর বলেন, পাঁচটি ব্যাংককে একীভূত করার কাজ চলছে। পাশাপাশি জনগণের আস্থা বাড়াতে ডিপোজিট গ্যারান্টি এক লাখ থেকে দুই লাখে বাড়ানো হয়েছে। এতে ছোট আমানতকারীরা কিছুটা হলেও নিশ্চয়তা পাচ্ছেন।
তিনি জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার অংশ হিসেবে চলতি সপ্তাহ অথবা সর্বোচ্চ আগামী সপ্তাহেই অর্থ বিতরণ শুরু হতে পারে—যা দীর্ঘদিন ধরে অনিশ্চয়তায় থাকা গ্রাহকদের জন্য বড় স্বস্তির খবর।
ডলারের বাজারে সতর্ক অবস্থান
বৈদেশিক মুদ্রা বাজার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে গভর্নর জানান, IMF-এর পরামর্শ অনুযায়ী পুরোপুরি বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালু করলে দেশের মুদ্রার মান পাকিস্তান বা শ্রীলঙ্কার মতো দ্রুত অবমূল্যায়িত হতে পারত।
তিনি বলেন—
“এভাবে এগোলে ডলারের দাম ১৯০–২০০ টাকায় পৌঁছাতে পারত। আমরা সেই ঝুঁকি নেইনি।”
ডলার বাজারে কোনো হস্তক্ষেপ নেই উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, বর্তমানে আমানত বেড়েছে এবং বাজেট সহায়তার জন্য টাকা ছাপানো বন্ধ করা হয়েছে। ফলে রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
রাজস্ব ও কর ব্যবস্থায় উদ্বেগ
এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান জানান, রাজস্ব আদায় ১৫ শতাংশ বাড়লেও কর-জিডিপি অনুপাত কমা উদ্বেগজনক।
তিনি বলেন, ভ্যাট আইন কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হয়নি।
কর ছাড় এখন থেকে এনবিআর একা দেবে না—এর জন্য সংসদের অনুমোদন লাগবে।
এছাড়া রাজস্ব আয় বাড়াতে—
-
শুল্ক কমানো,
-
ভ্যাট ও অন্যান্য কর বাড়ানো,
-
নগদ অর্থের ব্যবহার কমানো—
এই পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
বিশেষজ্ঞদের সতর্কবাণী
বিশ্বব্যাংকের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, অর্থনীতির সূচকগুলোতে নেতিবাচক দিক এখনও বেশি। তিনি উল্লেখ করেন—
“পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারত, তবে দেড় বছরের সংস্কারেও বড় বাস্তবায়ন হয়নি।”
সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, সুদের হার বাড়ানো মূল্যস্ফীতি কমালেও বিনিয়োগ কমেছে, কর্মসংস্থান কমেছে, আয় বৈষম্য বেড়েছে।
তার মতে, দুর্নীতি দমন ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ছাড়া অর্থনীতির স্থিতি আসবে না।
পাঠকের মন্তব্য