![]()
দেশের মানুষের ঘরোয়া ব্যয় ইতোমধ্যে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে বিপর্যস্ত। তার মধ্যেই আবারও বাড়ানো হলো ভোজ্যতেলের দাম। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৬ টাকা বাড়িয়ে ১৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিনের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৫৫ টাকা, খোলা সয়াবিন তেলের লিটার ১৭৬ টাকা এবং পাম তেল লিটারপ্রতি ১৬৬ টাকা। এই নতুন দাম আগামী সোমবার (৮ ডিসেম্বর) থেকেই কার্যকর হচ্ছে।
রবিবার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন এক বিজ্ঞপ্তিতে দাম বৃদ্ধির এই ঘোষণা দেয়। তাদের মতে, আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচা তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করেই নতুন এই মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
ঘোষণাহীন দাম বাড়িয়ে বিপাকে সাধারণ মানুষ
নতুন ঘোষণার আগেই বাজারে সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়ে দেয় অনেক ব্যবসায়ী। হঠাৎ করেই ৫ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল ৯৬৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে, যেখানে আগের মূল্য ছিল ৯২২ টাকা। একইভাবে ১৮৯ টাকায় বিক্রি হওয়া এক লিটার বোতলের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ১৯৮ টাকা। কোনো প্রকার সরকারি অনুমতি ছাড়াই এই মূল্যবৃদ্ধি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভোক্তারা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আপত্তি
সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “ব্যবসায়ীরা তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো সম্মতি নেয়নি। একত্রিত হয়ে এভাবে দাম বাড়ানো আইনসংগত নয়। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।”
কিন্তু উপদেষ্টার এই বক্তব্যের পরদিনই রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন নতুন দাম ঘোষণা করে।
জীবনযুদ্ধে সংগ্রাম আরও বেড়ে গেল
দাম বাড়ার ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের পরিবার। বর্তমানে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা যেভাবে কমছে, তাতে এই মূল্যবৃদ্ধি তাদের দৈনন্দিন জীবনে আরও চাপ সৃষ্টি করবে। অনেক পরিবারের জন্য খাবার টেবিলে নিয়মিত রান্না এখন আর শুধু রান্নার বিষয় নয়—এটি হয়ে উঠছে আর্থিক সামর্থ্যের পরীক্ষা।
তেলের মতো মূল ভোক্তা পণ্যের অস্থিতিশীলতা দেশের অধিকাংশ মানুষের জীবনে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে। বিশেষ করে যেসব পরিবার মাসিক আয়ে সংসার চালায়, তাদের জন্য এই দাম বৃদ্ধি কেবল অর্থনৈতিক চাপই নয়—মানসিক উদ্বেগও বাড়িয়ে তুলছে।
পাঠকের মন্তব্য