![]()
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)–এর ন্যায়পরায়ণতা এমন এক আদর্শ, যা নিয়ে মুসলমান কিংবা অমুসলমান, বিশ্বাসী বা অবিশ্বাসী—কেউই কখনো প্রশ্ন তোলেননি। রাষ্ট্র ও সরকার পরিচালনায় সেই ন্যায়পরায়ণতার পথই হবে বিএনপির মূলনীতি। এই আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশ গড়তে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দেশের সকল ইমাম, খতিব, মুয়াজ্জিন, আলেম-ওলামা ও পীর-মাশায়েখদের দোয়া এবং সমর্থন কামনা করেন তিনি।
রবিবার (২৩ নভেম্বর) রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ইমাম ও খতিব সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান জানান, আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় এলে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের জন্য ‘সম্মানী ভাতা’ পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে। পাশাপাশি ‘ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট’কে আরও শক্তিশালী করে তাদের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে নতুন প্রকল্প নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, এই সম্মেলন অন্য সাধারণ রাজনৈতিক সমাবেশের মতো নয়। এতে উপস্থিত সবাই ইসলাম, সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণ কামনায় একত্র হয়েছেন। একজন মুসলমানের ঈমানের ভিত্তি তাওহীদ, রিসালাত ও আখেরাত—এ বিষয়গুলোতে সকল মুসলমানের ঐক্য রয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক স্বার্থে ধর্মীয় ইস্যুকে ব্যবহার করার প্রবণতা সমাজে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। সেক্ষেত্রে ইমাম-খতিব ও ওলামায়ে কেরাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন।
তারেক রহমান বলেন, ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী দল হিসেবে বিএনপি এমন একটি সমাজ ব্যবস্থা চায় যেখানে মুসলমানরা নির্ভয়ে কোরআন–সুন্নাহ অনুযায়ী জীবনযাপন করতে পারবেন, এবং অন্যান্য ধর্মের অনুসারীরাও নিরাপদে নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারবেন। বিএনপি কখনো ইসলামের মৌলনীতি থেকে সরে আসেনি এবং ভবিষ্যতেও আসবে না।
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন—স্বাধীনতাত্তোর প্রথম সংবিধানে জনগণের ইসলামী মূল্যবোধ প্রতিফলিত হয়নি। পরে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সংবিধানে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ এবং ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস’ যুক্ত করেন। বর্তমান সংবিধানে এ শব্দগুলোর জায়গা পরিবর্তন কেন করা হলো—এ প্রশ্নও তিনি শ্রোতাদের সামনে তোলেন।
তারেক রহমান বলেন, দেশে প্রায় সাড়ে তিন লাখ মসজিদে ১৭ লাখেরও বেশি ইমাম-খতিব-মুয়াজ্জিন দায়িত্ব পালন করছেন। মসজিদ-মাদরাসাকে রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন কাঠামোর বাইরে রেখে টেকসই অগ্রগতি সম্ভব নয়। বিএনপি তাই তাদের উন্নয়ন, সুরক্ষা ও আর্থিক নিরাপত্তায় সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
তিনি আরও বলেন, ইমাম-খতিব-মুয়াজ্জিনদের জন্য আলাদা ‘সার্ভিস রুল’ করা জরুরি, যাতে তাদের চাকরি মসজিদ কমিটির ইচ্ছাধীন না থাকে। ক্ষমতায় গেলে এই দাবি অগ্রাধিকারভিত্তিতে বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন তিনি।
আগামী জাতীয় নির্বাচনের গুরুত্ব তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, দেশের স্বাধীনতা, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ গঠনের জন্য জাতির ঐক্য এখন অপরিহার্য।
পরিশেষে তিনি নিজের, দলের নেতাকর্মীদের এবং দেশবাসীর জন্য সকলের দোয়া প্রার্থনা করেন এবং সম্মিলিত ইমাম-খতিব পরিষদকে সফল সম্মেলনের জন্য ধন্যবাদ জানান।
পাঠকের মন্তব্য