
নানা নাটক, বিতর্ক আর কেলেঙ্কারিতে মোড়া এবারের ‘মিস ইউনিভার্স’ আসর শেষ হলো ব্যাংককে। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে মুকুট পরলেন মেক্সিকোর ২৫ বছর বয়সী ফাতিমা বশ। তাঁর বিজয়কে ঘিরে বিশ্বজুড়ে চলছে আলোচনা, কারণ এই নভেম্বরের শুরুতেই এক অনুষ্ঠানে আয়োজকদের আচরণের প্রতিবাদে তিনি অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেছিলেন।
বিজয়ের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দুই ভাগে বিভক্ত। মেক্সিকোর মানুষ এবং যারা ফাতিমার প্রতিবাদের প্রশংসা করেছিলেন, তারা উচ্ছ্বসিত। অন্যদিকে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, আগের ভুলের ক্ষতিপূরণের অংশ হিসেবেই কি আয়োজকরা তাকে মুকুট দিয়েছেন।
প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার-আপ হয়েছেন থাইল্যান্ডের প্রবীনার সিং এবং দ্বিতীয় রানার-আপ ভেনেজুয়েলার স্টেফানি আব্বাসলি। এছাড়া ফিলিপাইন ও আইভরি কোস্টের প্রতিযোগীরা শীর্ষ ৫-এ স্থান পেয়েছেন।
চলতি মাসের শুরুতে একটি প্রাক-অনুষ্ঠানে ফাতিমাকে আয়োজক নাওয়াত ইটসারাগ্রাসিল বকাঝকা করেন, অভিযোগ ছিল ফাতিমা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণামূলক পোস্ট দেননি। ফাতিমার প্রতিবাদের পর আয়োজক নিরাপত্তারক্ষীদের ডাকেন এবং হুমকি দেন, যারা তাকে সমর্থন করবে তাদেরও বাদ দেওয়া হবে। এরপরই ফাতিমা অনুষ্ঠান ছেড়ে বেরিয়ে যান। তাঁর সঙ্গে সংহতি জানিয়ে আরও কয়েকজন প্রতিযোগীও বের হয়ে আসেন। বিষয়টি বিশ্বমিডিয়ায় শিরোনাম হয়। মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবাম তখন ফাতিমার সাহসের প্রশংসা করেছিলেন।
শুক্রবারের ফাইনালে নাওয়াতকে মঞ্চে দেখা যায়নি। ফাতিমার জয়ের পর তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘একশ কোটি কথা যা বলা সম্ভব নয়।’ এক সপ্তাহ পরই দুজন বিচারক নাটকীয়ভাবে পদত্যাগ করেন; একজন অভিযোগ আনেন যে একটি ‘অঘোষিত জুরি বোর্ড’ বিজয়ীদের আগেই ঠিক করে রেখেছিল। তবে মিস ইউনিভার্স অর্গানাইজেশন এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এরই মধ্যে প্রিলিমিনারি রাউন্ডে মিস জ্যামাইকা মঞ্চে পড়ে গিয়ে হাসপাতালে নেওয়া হয়, তবে হাড় ভাঙেনি। বিশ্লেষকরা বলছেন, থাই ও মেক্সিকান আয়োজকদের সাংস্কৃতিক ও কৌশলগত পার্থক্যের কারণে এবার আসর এত বিশৃঙ্খল।
১৯৫২ সাল থেকে অনুষ্ঠিত হওয়া মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতার ৭৪তম আসরটি শেষ হলো, যেখানে এখন টেলিভিশনের বদলে টিকটক ও ইনস্টাগ্রাম প্রাধান্য পাচ্ছে। লাতিন আমেরিকা ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় জনপ্রিয় থাকলেও নারীর শরীর প্রদর্শন ও প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। সাবেক প্রেসিডেন্ট পলা শুগার্ট বলেছেন, ‘সবাইকে ভালো লাগবে এমন নয়, তবে নারীদের ক্ষমতায়নই এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য।’
পাঠকের মন্তব্য