বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো জেলবন্দিরাও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন। শুক্রবার নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম সরকার এই ঘোষণা দেন। তিনি জানান, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিচারাধীন ও সাজাপ্রাপ্ত বন্দিরাও ভোটাধিকারের সুযোগ পাবেন—এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থায় এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “আমরা চাই, দেশের প্রতিটি নাগরিক তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারুক। বিচারাধীন বা সাজাপ্রাপ্ত হওয়া মানে নাগরিক হিসেবে অধিকার হারানো নয়।”
১৮ বছর পূর্ণ যাঁরা, তারাও ভোটার
এছাড়া, যাঁদের বয়স ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে, তারাও এবারের নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সুপারিশ অনুযায়ী, রমজান মাস শুরুর আগে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কমিশনার।
প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন
নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশজুড়ে প্রশাসনিক ও নিরাপত্তা প্রস্তুতি জোরদার করা হয়েছে। আনোয়ারুল ইসলাম জানান, “প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আমরা সারা দেশে প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার এবং রিটার্নিং অফিসারদের সঙ্গে মতবিনিময় করছি।”
এছাড়া পুলিশ প্রশাসন ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখা—স্থল, নৌ ও বিমানবাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কমিশন বৈঠক করেছে বলে জানান তিনি।
‘খারাপ পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠব’—আশাবাদী নির্বাচন কমিশন
বর্তমান অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিয়েও মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, “সারা দেশে একটা খারাপ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ফলে ভোট গ্রহণের দায়িত্বে থাকা অনেক কর্মকর্তা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছেন। তবে আমরা আশাবাদী, এ পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারব এবং একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করতে পারব।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বন্দিদের ভোটাধিকার বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন গণতান্ত্রিক অন্তর্ভুক্তির পথে এক বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। এ উদ্যোগ আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থার ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল করতে পারে।
পাঠকের মন্তব্য