
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব ও সুপারিশ নিয়ে আপত্তি থাকলেও জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সরকারের প্রতি এখনো পূর্ণ আস্থা রয়েছে বিএনপির।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “জুলাই সনদ নিয়ে আপত্তি থাকলেও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আমাদের কোনো শঙ্কা নেই। বিএনপি বিশ্বাস করে, প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণামতে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে—এ বিষয়ে কোনো ধোঁয়াশা নেই।”
তিনি অভিযোগ করেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবনা ও সুপারিশ একপেশে এবং জবরদস্তিমূলকভাবে জাতির ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। যেসব বিষয়ে ভিন্নমত বা ‘নোট অব ডিসেন্ট’ ছিল, তা উল্লেখ না করে, বরং আলোচনায় না ওঠা বিষয়ও যুক্ত করা হয়েছে—যা গ্রহণযোগ্য নয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, “জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের জন্য সরকার যে ‘সংবিধান সংস্কার বাস্তবায়ন আদেশ ২০২৫’-এর খসড়া প্রস্তাব পেয়েছে, তা সরকারের এখতিয়ারভুক্ত নয়। সংবিধান সংশোধন বা নতুন আদেশ অবশ্যই রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরে হতে হবে, অন্যথায় তা গণতান্ত্রিক রীতির পরিপন্থি হবে।”
তিনি আরও বলেন, প্রস্তাবিত সংস্কারে “জুলাই সনদ বাস্তবায়ন পরিষদ” নামের নতুন সংস্থা যোগ করা অনভিপ্রেত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। পাশাপাশি ২৭০ দিনের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন না হলে গণভোটের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবকে তিনি “অযৌক্তিক, হাস্যকর ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধবিরোধী” বলে অভিহিত করেন।
গণভোট প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একইসঙ্গে গণভোট আয়োজনের বিষয়টি যুক্তিযুক্ত নয়; সময়, অর্থ ও প্রশাসনিক বাস্তবতার কারণে তা অবিবেচনাপ্রসূত হবে।
তিনি বলেন, “বিএনপি গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও রাষ্ট্রীয় সংস্কারে সবসময় ইতিবাচক। তবে জাতির প্রকৃত কল্যাণ নিশ্চিত করতে দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা আমাদের অবস্থান স্পষ্টভাবে প্রকাশ করছি।”
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, সালাহউদ্দিন আহমেদ ও মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
পাঠকের মন্তব্য