ল্যাপটপ এখন শুধু কাজের নয়—ব্যক্তিগত জীবনেরও এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। অফিসের প্রজেক্ট, ব্যাংকিং তথ্য, ছবি, ভিডিও কিংবা নানা গুরুত্বপূর্ণ নথি—সবকিছুই আজ এই ছোট্ট যন্ত্রে সংরক্ষিত। কিন্তু হ্যাকারদের গোপন আক্রমণ বা ক্ষতিকর সফটওয়্যার (ম্যালওয়্যার) মুহূর্তেই সেই তথ্য চুরি করে নিতে পারে। এমনকি ব্যবহারকারীর ওপরও নজরদারি চালাতে পারে। তাই আগে থেকেই সতর্ক থাকা জরুরি। নিচে দেওয়া হলো কয়েকটি লক্ষণ, যা দেখে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার ল্যাপটপে ম্যালওয়্যার ঢুকেছে কিনা।
১. হঠাৎ ধীর হয়ে যাওয়া
ল্যাপটপ স্বাভাবিকের তুলনায় ধীরে কাজ করা বা চালু হতে সময় নেওয়া ম্যালওয়্যার সংক্রমণের প্রথম লক্ষণ হতে পারে। এসব ক্ষতিকর সফটওয়্যার আপনার প্রসেসর ব্যবহার করে দূরের সার্ভারে তথ্য পাঠায়, ফলে ল্যাপটপের পারফরম্যান্স কমে যায়।
২. অচেনা বিজ্ঞাপন বা পপ-আপ দেখা
ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় হঠাৎ অচেনা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন বা পপ-আপ দেখা দিলে সতর্ক হোন। এটি সাধারণত ‘অ্যাডওয়্যার’ নামের ম্যালওয়্যারের কারণে ঘটে, যা ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়াই বিজ্ঞাপন দেখায় এবং অনেক সময় তথ্য চুরি করে।
৩. ব্রাউজারের পরিবর্তন
যদি নিজের অজান্তে ব্রাউজারের হোমপেজ, সার্চ ইঞ্জিন বা এক্সটেনশন পরিবর্তন হয়ে যায়—তবে বুঝবেন আপনার ডিভাইস আক্রান্ত। এটি এমন এক ধরনের ম্যালওয়্যার যা ব্রাউজারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ব্যবহারকারীর সার্চ তথ্য সংগ্রহ করে।
৪. ল্যাপটপ অতিরিক্ত গরম হওয়া
ফ্যানের শব্দ বেড়ে যাওয়া বা ল্যাপটপ দ্রুত গরম হয়ে যাওয়া হতে পারে গোপন ম্যালওয়্যারের কাজ। এগুলো ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকে এবং প্রসেসরে অতিরিক্ত চাপ ফেলে।
৫. অপরিচিত সফটওয়্যার ইনস্টল
নিজে ইনস্টল না করা নতুন কোনো সফটওয়্যার যদি ল্যাপটপে দেখতে পান, তবে সেটি ম্যালওয়্যার হতে পারে। সফটওয়্যার তালিকা যাচাই করুন এবং সন্দেহজনক কিছু থাকলে দ্রুত মুছে ফেলুন।
৬. ফাইল হারিয়ে যাওয়া বা ‘লক’ হওয়া
হঠাৎ গুরুত্বপূর্ণ ফাইল উধাও হয়ে গেলে বা খুলতে গেলে ‘লকড’ বার্তা দেখালে এটি হতে পারে র্যানসমওয়্যারের কাজ। এই ম্যালওয়্যার আপনার ফাইল এনক্রিপ্ট করে ফেলে এবং অর্থ দাবি করে তা ফেরত দিতে।
৭. অ্যান্টিভাইরাস নিষ্ক্রিয় হওয়া
যদি দেখেন আপনার অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেছে বা কাজ করছে না—তবে তা শক্তিশালী ম্যালওয়্যারের ইঙ্গিত হতে পারে। এসব ক্ষতিকর প্রোগ্রাম নিরাপত্তা সফটওয়্যারকেও নিষ্ক্রিয় করে দেয়।
কীভাবে সতর্ক থাকবেন:
-
নির্ভরযোগ্য অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করুন এবং নিয়মিত আপডেট দিন।
-
সন্দেহজনক ইমেইল বা ওয়েবসাইটে ক্লিক করবেন না।
-
অচেনা ইউএসবি বা ডিভাইস সংযুক্ত করার আগে স্ক্যান করুন।
-
প্রয়োজনীয় ফাইল নিয়মিত ব্যাকআপ রাখুন।
পাঠকের মন্তব্য