প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ইতালির রোমে অনুষ্ঠিত বিশ্ব খাদ্য ফোরাম ২০২৫-এ ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব গঠনের জন্য ছয় দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন। তিনি বলেন, ক্ষুধা কোনো খাদ্য উৎপাদনের অভাবে নয়, বরং বর্তমান অর্থনৈতিক ও সামাজিক ব্যবস্থার ব্যর্থতার ফল।
ছয় দফা প্রস্তাবের মূল বিষয়গুলো:
- সংঘাত ও যুদ্ধ বন্ধ: সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে খাদ্য পৌঁছানোর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
- টেকসই উন্নয়ন ও জলবায়ু ব্যবস্থাপনা: এসডিজি অর্জনে অর্থায়ন নিশ্চিত ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর সহায়তা বৃদ্ধি।
- আঞ্চলিক খাদ্য ব্যাংক: খাদ্য সরবরাহ চেইন স্থিতিশীল করতে।
- কৃষক ও উদ্যোক্তা সহায়তা: তরুণ ও স্থানীয় উদ্যোক্তাদের অর্থায়ন, অবকাঠামো ও বৈশ্বিক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে সাহায্য।
- বাণিজ্য নীতি: রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
- প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন: বিশেষ করে গ্লোবাল সাউথের কৃষক ও উদ্যোক্তাদের জন্য উদ্ভাবনী প্রযুক্তির সুযোগ।
তিনি ‘থ্রি জিরো’ বিশ্ব (শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব, শূন্য কার্বন নিঃসরণ) গড়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে দারিদ্র্য ও ক্ষুধা দূর করা সম্ভব, এবং তরুণদের ক্ষমতায়ন ছাড়া এটি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের অর্জন তুলে ধরে জানান, দেশ ধান উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ, ১৩ লাখ রোহিঙ্গাকেও আশ্রয় ও খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে, কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণ ও ভর্তুকি বৃদ্ধি, খাদ্য বিতরণ ও অপুষ্টি হ্রাসসহ সবুজ কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে।
তিনি ফোরামের তিনটি স্তম্ভ—যুব, বিজ্ঞান ও বিনিয়োগ—কে বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা ও সামাজিক পরিবর্তনের মূল হাতিয়ার হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
পাঠকের মন্তব্য