জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বৃহস্পতিবার পঞ্চগড়ে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র নিন্দা ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, বারবার কোনো অনুষ্ঠান চলাকালীন বিদ্যুৎ চলে যাওয়া গ্রহণযোগ্য নয় এবং এ ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জবাবদিহি করতে হবে।
পঞ্চগড় জেলা শহরের শেরেবাংলা পার্কসংলগ্ন জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে রাত সাড়ে নয়টার দিকে সমাপ্তি বক্তব্যে তিনি বলেন, পূর্বে এনসিপি-র প্রোগ্রাম চলাকালে একাধিকবার বিদ্যুৎ চলে গেছে। তিনি অভিযোগ করেন, কোনো প্রতিষ্ঠান যদি রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতমূলক আচরণ করে বা অনুষ্ঠানের শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে, তবে তার বিরুদ্ধে সংগঠিতভাবে অবস্থান নেওয়া হবে।
লংমার্চ ও সমাবেশ
এ ঘটনার আগে এনসিপি পঞ্চগড় জেলা ও উত্তরাঞ্চলীয় শাখার উদ্যোগে শনিবার দুপুর সোয়া বারোটায় পঞ্চগড়ের ঐতিহাসিক চিনিকল মাঠ থেকে বাংলাবান্ধার উদ্দেশে একটি লংমার্চ বের করা হয়। এতে অংশ নেয় বেশ কয়েকটি পিকআপ ও প্রায় পাঁচ শতাধিক মোটরসাইকেলের বহর। লংমার্চে অংশ নেন এনসিপির পাঁচ উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী ও জাতীয় যুবশক্তি ও এনসিপির নেতা-কর্মীরা।
লংমার্চ শেষে অনুষ্ঠিত সমাপ্তি বক্তব্যে সারজিস আলম বলার চেষ্টা করেন যে, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, দখলদারী এবং সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেওয়াই তাদের আন্দোলনের উদ্দেশ্য। তিনি উল্লেখ করেন, যারা সাধারণ মানুষের কল্যাণের বিরুদ্ধে কাজ করে, তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আইনি ও প্রশাসনিকভাবে তোয়াক্কা করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হবে।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও প্রতিক্রিয়া
সারজিস আলমের অভিযোগের লক্ষ্য হিসেবে স্থানীয় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা (নেসকো) ও তার দায়িত্বরতদের কটাক্ষ করেছেন তিনি। অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া দর্শক ও স্থানীয় নেতারা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতার ঘটনা সম্পর্কে উদ্বেগ ব্যক্ত করেছেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ব্যাহতির পুনরাবৃত্তি রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
স্থানীয় প্রশাসন বা নেসকো কর্তৃপক্ষের কোনো প্রতিক্রিয়া এই প্রতিবেদনের সময় পাওয়া যায়নি। ঘটনার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বক্তব্য পাওয়া গেলে পরবর্তীতে প্রকাশ করা হবে।
বিশ্লেষণ
পঞ্চগড়ের মতো জেলা-উপজেলার রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অবকাঠামোগত ট্রেড-অফ বা সেবা বিঘ্ন ঘটলে তা দ্রুত স্থানীয় উত্তেজনার সূত্রে পরিণত হতে পারে। স্থানীয় নেতারা যখন বিদ্যুৎ, পানি বা অন্যান্য মৌলিক সেবার অনিয়মকে রাজনৈতিক দিক থেকে উপস্থাপন করেন, তখন তা প্রশাসনিক প্রতিক্রিয়া ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ উভয়ের প্রতিক্রিয়া ছুঁড়িয়ে দেয়—অতএব দ্রুত ও স্বচ্ছ তদন্ত, চলমান সমস্যা সমাধানে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের তৎপরতা প্রয়োজন।
শেষ কথা
এনসিপি নেতাদের লংমার্চ ও সমাবেশে প্রকাশিত অসন্তোষ স্থানীয় রাজনৈতিক পরিবেশে নতুন ইস্যু হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। অভিযোগগুলো সরকারি ও বেসরকারি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যাচাই করে যদি দ্রুত নিবারণমূলক ব্যবস্থা নেয়, তাহলে সামাজিক উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে—তাই স্থানীয়ভাবে সমাধান আহ্বানই প্রয়োজনে বেশি কার্যকর পদক্ষেপ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
পাঠকের মন্তব্য