জেরেড কুশনার, যে নামটি শুনলেই স্বয়ং ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাই পরিচয় সামনে চলে আসে, ফিলিস্তিন ও মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন নীতির মধ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ—but বিপজ্জনক—সামরিক ও করপোরেট প্রভাব ফেলে চলেছেন। উত্তরাধিকারের ভিত্তিতে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা পেয়েছেন কুশনার, কিন্তু রাজনৈতিক ও কৌশলগত জ্ঞান অনেকাংশে অপরিপক্ব। তবে এই স্বাভাবিক ধারণার বিপরীতে, তার কাজের মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে এমন এক পরিস্থিতি যা ফিলিস্তিনিদের মানবিক অধিকার, জীবনের নিরাপত্তা এবং মৌলিক স্বাধীনতাকে সরাসরি প্রভাবিত করছে।
কুশনারের তথাকথিত ‘শতাব্দীর চুক্তি’ মূলত ফিলিস্তিনিদের জমি দখল, তাদের জীবন ও কর্মসংস্থান নিয়ন্ত্রণ এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের লাভ নিশ্চিত করার একটি পরিকল্পনা। এটি সত্যিকার অর্থে একটি আধুনিক উপনিবেশবাদী প্রকল্প, যেখানে পবিত্র শহর থেকে শরণার্থী শিবির পর্যন্ত সবকিছুই অর্থনীতি ও বিনিয়োগের খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গাজার কিছু অংশকে ‘গাজা রিভিয়েরা’ হিসেবে উন্নত করার কথা বলা হয়েছে, যা দারিদ্র্য দূর করার আড়ালে মানবিক অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করছে।
ফিলিস্তিনিরা তাদের নিজেদের জমিতে অল্প বেতনের সেবাকর্মী হিসেবে নিয়োজিত থাকবেন, আর আন্তর্জাতিক করপোরেশন ও বিদেশি সরকাররা সেখানে লাভ তুলবেন। এতে শুধু ফিলিস্তিনিরাই নয়, পুরো মধ্যপ্রাচ্যের মানবিক নিরাপত্তা ও সমাজিক স্থিতিশীলতাই বিপন্ন হচ্ছে। জনসাধারণের অংশগ্রহণ ছাড়া উপরের দিকে চাপিয়ে দেওয়া এই চুক্তি রাজনীতিতে স্বাভাবিক আলোচনার সুযোগকেও দূরে সরিয়ে দিয়েছে।
অধিকারহীন মানুষের ওপর চাপিয়ে দেওয়া এই ব্যবস্থা দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীল নয়। যুবসমাজ—বিশেষ করে জেনারেশন জেড—এ ধরনের অনৈতিক ও উপনিবেশবাদী পরিকল্পনাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে সচেষ্ট। এই প্রজন্ম ফিলিস্তিনকে কেবল রাজনৈতিক সমস্যা হিসেবে দেখছে না, বরং তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অনৈতিক দখলের বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, কুশনারের নীতি শুধু জমি ও তেলের জন্য নয়; এটি একটি করপোরেট ও উপনিবেশবাদী সভ্যতার রূপরেখা, যেখানে মানুষের জীবন ও মানবিক অধিকার ব্যবসার পণ্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ফিলিস্তিনিদের জীবন ও নিরাপত্তা সরাসরি হুমকির মুখে, এবং আরব বিশ্বের স্বতন্ত্রতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়ছে।
মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি যে কতটা গুরুতর, তা বোঝা যায় গাজার শিশু, নারী ও প্রবীণদের অবস্থান থেকে। মানুষের মৌলিক অধিকার, জীবনধারণের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিক্ষার সুযোগ—all these are jeopardized in the wake of such unchecked, corporately driven policies. আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোর এখন এই অবস্থা মোকাবেলায় সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
গাজা ও ফিলিস্তিনের মানুষের মানবিক নিরাপত্তা, স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষার দায়িত্ব কেবল স্থানীয় সরকার বা অভিজাতদের ওপর নয়; এটি আমাদের সকলের—a global human responsibility। যারা শান্তি, মানবিক মর্যাদা এবং ন্যায়বিচারের পক্ষে বিশ্বাসী, তাদের এখন অবশ্যই এই বিপজ্জনক নীতির বিরুদ্ধে সুরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে।
এভাবেই কুশনারের নীতি মানবিক বিপর্যয়, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সামাজিক বৈষম্যকে একত্রিত করে মধ্যপ্রাচ্যের মানুষের জীবনকে আরও কঠিন করে তুলেছে। ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহানুভূতিশীল এবং ন্যায়পরায়ণ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় হস্তক্ষেপ ছাড়া এই পরিস্থিতি সহজে সমাধান হবে না।
পাঠকের মন্তব্য