রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে আলোচিত ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ প্যানেল বড় ধরনের ভাঙনের মুখে পড়েছে। একে একে তিনজন প্রার্থী প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। সর্বশেষ শুক্রবার রাতে সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদপ্রার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আকিল বিন তালেব ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
এর আগে, মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক পদপ্রার্থী ফাহির আমিন (১২ সেপ্টেম্বর) এবং সহমিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক প্রার্থী এম শামীম (১৭ সেপ্টেম্বর) নিজেদের প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানান।
প্যানেলের শক্তি ও গুঞ্জন
‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ প্যানেলটি আত্মপ্রকাশ করেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সাবেক সমন্বয়কের নেতৃত্বে। গত জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী এই সমন্বয়কদের উপস্থিতি প্যানেলটির মূল শক্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছিল। তবে ক্যাম্পাসে গুঞ্জন চলছে, এ প্যানেলটি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কিংবা ছাত্রশিবিরের ছায়া টিম হিসেবে কাজ করছে। এর মধ্যেই একে একে তিনজন প্রার্থীর সরে দাঁড়ানো নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।
আকিল বিন তালেবের বক্তব্য
ফেসবুক পোস্টে আকিল বিন তালেব লিখেছেন,
“সাম্প্রতিক নানা বাস্তবতায় এবং ব্যক্তিগত কারণে আমি ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ প্যানেল থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি। একটি প্যানেল টিমওয়ার্কের মাধ্যমে গড়ে ওঠে, তবে জয়ী হওয়ার বিষয়টি নির্ভর করে ব্যক্তির যোগ্যতা, সততা ও কর্মদক্ষতার ওপর। আমাদের ভেতরে পারস্পরিক বোঝাপড়ার কিছু ঘাটতির কারণে অনেকে ইতিমধ্যে সরে দাঁড়িয়েছেন। আমিও সেই ধারাবাহিকতায় সরে দাঁড়াচ্ছি।”
তিনি আরও জানান, তিনি রাকসু নির্বাচনে এজিএস ও সিনেট সদস্য—দুটি পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। তবে একসঙ্গে দুটি পদে প্রচারণা চালানো সম্ভব না হওয়ায় তিনি শুধু সিনেট সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
যোগাযোগের চেষ্টা
প্যানেলের শীর্ষ দুই প্রার্থী সহসভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী মেহেদী সজীব এবং সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী সালাউদ্দিন আম্মার—এর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁদের কাছ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
বিশ্লেষণ
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতিতে নতুন প্রজন্মের নেতৃত্ব হিসেবে ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ শুরুতে আলোচিত হলেও একে একে প্রার্থীরা সরে দাঁড়ানোয় প্যানেলের ভেতরের দ্বন্দ্ব ও দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, এই ভাঙন নির্বাচনে প্যানেলের অবস্থানকে দুর্বল করে দেবে।