অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “আমরা যদি নিজেরা বিভক্ত হই, তবে জাতি হিসেবে আমরা ব্যর্থ হবো। কিন্তু আমরা ব্যর্থ হতে চাই না।”
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর বেষ্টনির মধ্যে নয়, মুক্তভাবে ও সম্মানের সঙ্গে সবাই যেন নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারে—সেই বাংলাদেশ তিনি গড়তে চান। তিনি আরও বলেন, “আমরা এমন একটি নতুন বাংলাদেশ চাই, যেখানে সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে, রাষ্ট্র কারও সঙ্গে ধর্ম, পরিচয় বা বিশ্বাসের ভিত্তিতে বৈষম্য করবে না।”
ড. ইউনূস স্পষ্ট করে জানান, রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো সব ধর্ম ও বিশ্বাসকে সমান চোখে দেখা। ধর্মীয় পার্থক্য থাকা স্বাভাবিক, কিন্তু রাষ্ট্রের কাছে প্রত্যেক নাগরিক সমান মর্যাদার দাবিদার। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমরা এমন রাষ্ট্র গড়তে চাই, যা বিশ্ব আমাদের অনুসরণ করবে। জুলাই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে হলে সব ধর্মের মানুষকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
এর আগে, সোমবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকে নেতারা তাঁকে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আপনাদের সঙ্গে সবসময় দেখা করার ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ হয় না। পূজা উপলক্ষে বছরে একবার হলেও দেখা হয়, কথা বলার সুযোগ হয়।”
হিন্দু ধর্মীয় নেতারা জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর এক হাজারের বেশি পূজামণ্ডপ বেড়েছে। বর্তমানে সারাদেশে পূজামণ্ডপ প্রস্তুতির কাজ পুরোদমে চলছে। তারা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, এবারের দুর্গাপূজা আয়োজন নিয়ে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। বিশেষভাবে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও সচিবকে ধন্যবাদ জানান তারা।
ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে প্রধান উপদেষ্টার এ সফর ধর্মীয় সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছে। উপস্থিত নেতারা মনে করেন, এ ধরনের পদক্ষেপ মানুষের মধ্যে আস্থা তৈরি করবে এবং সামগ্রিকভাবে সামাজিক বন্ধনকে আরও দৃঢ় করবে।
পাঠকের মন্তব্য