চট্টগ্রাম, মহেশখালী: বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “শুধু গভীর সমুদ্র বন্দর নয়, আমাদের একটি সমন্বিত ব্লু ইকনোমি গড়ে তোলার ভিশন থাকতে হবে। ওই এলাকা শুধু একটি ফ্যাসিলেটিং জোন হিসেবে নয়, বরং সেখানে একটি নতুন শহরের জন্ম হবে। সমুদ্রই হবে বিশ্বের পথে আমাদের মহাসড়ক।”
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নবগঠিত মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (মিডা) এর সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে এ তথ্য জানিয়েছেন। মিডার চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুনের নেতৃত্বে সাক্ষাৎ করেন মিডার প্রতিনিধি দল।
গভীর সমুদ্র ও আন্তর্জাতিক সংযোগের গুরুত্ব
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস গভীর সমুদ্র নিয়ে গবেষণার ওপর বিশেষভাবে জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, মহেশখালী অঞ্চলে আন্তর্জাতিক মানের ট্রেইনিং ফ্যাসিলিটি গড়ে তোলার পরিকল্পনা থাকতে হবে। প্রয়োজনে বিশ্বের বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, “আমরা সমুদ্র জগতে কখনো প্রবেশ করিনি এবং এ বিষয়ে যথাযথ গবেষণা নেই। অন্য দেশের গবেষণাপত্র ও ফাইন্ডিংস খুঁজে বের করতে হবে এবং নিজস্ব গবেষণাও করতে হবে। এ জন্য একটি প্রতিষ্ঠান ও একাডেমিয়া গড়ে তুলতে হবে, এবং ওশান ইকনোমি নিয়ে আন্তর্জাতিক কনফারেন্স আয়োজন করতে হবে।”
পরিবেশ সংরক্ষণ ও ইকো-ট্যুরিজম
প্রফেসর ইউনূস পরিবেশ সংরক্ষণ ও বনভূমির গুরুত্বের ওপরও জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, “সেখানকার বনভূমি এখন কী অবস্থায় আছে এবং ভবিষ্যতে আমরা বনভূমিগুলোকে কী অবস্থায় দেখতে চাই—তারও পরিকল্পনা থাকতে হবে।” বৈঠকে ইকো-ট্যুরিজম পার্কের বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
প্রকল্পের ধাপ ও সম্ভাব্য প্রভাব
মিডার চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ জানিয়েছেন, মহেশখালী-মাতারবাড়ী প্রকল্পটি তিন ধাপে সম্পন্ন হবে:
-
প্রথম ধাপ: ২০২৫–২০৩০
-
দ্বিতীয় ধাপ: ২০৩০–২০৪৫
-
তৃতীয় ধাপ: ২০৪৫–২০৫৫
প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে প্রায় ২৫ লাখ লোকের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং জিডিপিতে প্রায় ডেড়শ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যুক্ত হবে।
উপস্থিত সদস্য ও সহযোগী কর্মকর্তা
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন:
-
মিডার সদস্য কমোডর তানজিম ফারুক
-
মো. সারোয়ার আলম
-
প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ
-
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব মো. সাইফুল্লাহ পান্না
উপসংহার
প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি অনুযায়ী মহেশখালী হবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও পরিবেশবান্ধব নগরায়ন ও ব্লু ইকনোমির মডেল এলাকা, যেখানে গবেষণা, আন্তর্জাতিক সংযোগ, পরিবেশ সংরক্ষণ ও সামাজিক কল্যাণ একসঙ্গে বাস্তবায়িত হবে।
পাঠকের মন্তব্য