শেরপুর নকলায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সমন্বয় কমিটির ১৫ জন সদস্য একযোগে পদত্যাগ করেছেন। একই সঙ্গে ৩২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি থেকে পদত্যাগকারীরা পুরো উপজেলা কমিটিকেও প্রত্যাখ্যান করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) রাতে প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই পদত্যাগের বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানানো হয়।
পদত্যাগকারীদের মধ্যে রয়েছেন ৫ জন যুগ্ম সমন্বয়কারী এবং ১০ জন সাধারণ সদস্য। যুগ্ম সমন্বয়কারীদের মধ্যে রয়েছেন মো. মমিনুল ইসলাম আরব, মনিরুল ইসলাম মনির, সিরাজুল ইসলাম সোহাগ, রাশিদুল জামান রাসেল ও জসীম উদ্দীন। সাধারণ সদস্যরা হলেন মো. দেলোয়ার হোসেন, সোহেল রানা, জাহাঙ্গীর আলম, সোহাগ মোল্লা, আলামিন মিয়া, রতন মিয়া, নাজমুল হাসান, সুমন মিয়া, আরিফ মিয়া ও সাদেকুল ইসলাম শান্ত।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নকলা উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী হুমায়ুন কবির আকাশ একজন অযোগ্য, অনাদর্শিক ও সামাজিকভাবে অগ্রহণযোগ্য ব্যক্তি। দীর্ঘ আত্মবিশ্লেষণ ও আলোচনা শেষে তারা স্বেচ্ছায় ও সম্মিলিতভাবে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন এবং পুরো উপজেলা কমিটিকেও প্রত্যাখ্যান করেছেন। এছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটির দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
পদত্যাগের বিষয়ে যুগ্ম সমন্বয়কারী মো. মমিনুল ইসলাম আরব বলেন, “প্রধান সমন্বয়কারী হুমায়ুন কবির আকাশের বিরুদ্ধে শহীদ পরিবারের কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তার শিক্ষাগত যোগ্যতাও প্রশ্নবিদ্ধ। একজন অযোগ্য ব্যক্তির নেতৃত্বে কাজ করা সম্ভব নয়—এই কারণেই আমরা সবাই পদত্যাগ করেছি।”
উল্লেখ্য, গত ১০ আগস্ট কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের স্বাক্ষরে নকলা উপজেলা কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। তাতে হুমায়ুন কবির আকাশকে প্রধান সমন্বয়কারী, ১০ জনকে যুগ্ম সমন্বয়কারী ও ২১ জনকে সদস্য করে মোট ৩২ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছিল।
কমিটি ঘোষণার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়। স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পদত্যাগের এই ঘটনাটি দলের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতার প্রতিফলন। এনসিপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে উত্তেজনা ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, “উপজেলা কমিটিতে দায়িত্বশীল ও যোগ্য নেতৃত্বের অভাব দলীয় কাজকর্মকে প্রভাবিত করতে পারে। এই পদত্যাগ এনসিপির স্থানীয় সংগঠনকে পুনর্গঠন ও নেতৃত্বের মান যাচাই করার প্রয়োজনীয়তাকে সামনে এনেছে।”
পদত্যাগের ফলে উপজেলা কমিটি শূন্যপ্রায় অবস্থায় পড়ে, যা স্থানীয় স্তরে দলীয় কার্যক্রম ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে পারস্পরিক সংযোগকে প্রভাবিত করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে দ্রুত নতুন ও যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য।
পাঠকের মন্তব্য