বরিশালে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক হোসাইন আল সুহানকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে আন্দোলনকারীরা কোতয়ালি মডেল থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করলে সেবাগ্রহীতারা চরম ভোগান্তিতে পড়েন।
পুলিশ জানিয়েছে, সুহান ছাত্রলীগ নেতা এবং তার বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা রয়েছে। আইনগতভাবেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে আন্দোলনকারীরা বলছেন, সুহান স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছিলেন। তার গ্রেপ্তারকে তারা আন্দোলন দমনের কৌশল হিসেবে দেখছেন।
এর আগে, সুহানের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুরে আন্দোলনকারীরা জেলা প্রশাসক কার্যালয় ঘেরাও করে সড়ক অবরোধ করেন। একইদিন বিকেলে তারা জেলা প্রশাসকের কাছে স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে স্মারকলিপিও দেন। কিন্তু সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত নামতেই থানা ঘেরাও কর্মসূচি পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তোলে।
পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক ও কর্মচারীদের ওপর হামলা এবং জুলাই অভ্যুত্থানের সময় আরেকটি হামলার মামলায় সুহানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
অন্যদিকে আন্দোলনকারীদের দাবি, আন্দোলনের নাম করে হাসপাতালের চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগ ভিত্তিহীন। তাদের মতে, স্বাস্থ্যখাতের অব্যবস্থাপনা, সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য ও রোগীদের হয়রানির বিরুদ্ধে যারা আন্দোলন করছে, তাদের কণ্ঠরোধের জন্যই নেতাদের টার্গেট করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ দিন ধরে বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে এই আন্দোলন চলছে। আন্দোলনকারীদের মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সাবেক নেতাও রয়েছেন। তারা বলছেন, “স্বাস্থ্যখাত বাঁচাতে জীবন দেব, কিন্তু আন্দোলন থেকে এক কদমও পিছু হটব না।”
মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে আন্দোলনকারীদের অবস্থান স্পষ্ট—তারা স্বাস্থ্যসেবা সাধারণ মানুষের জন্য সহজলভ্য, সাশ্রয়ী ও হয়রানিমুক্ত দেখতে চান। সুহানের গ্রেপ্তারের ঘটনাকে তাই সাধারণ মানুষও কৌতূহল ও উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছেন।
পাঠকের মন্তব্য