ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় আজ (৩ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন ও প্রথম সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হতে যাচ্ছে।
প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম জানিয়েছেন, আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে মামলার সূচনা বক্তব্য সরাসরি সম্প্রচার করা হতে পারে। মামলার প্রথম সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণও আজ থেকেই শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন। মামলায় দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হিসেবে সাক্ষ্য দিতে চাওয়া চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আবেদনও ট্রাইব্যুনাল মঞ্জুর করে।
আজকের শুনানিতে প্রসিকিউশনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম যুক্তি উপস্থাপন করবেন। তার সঙ্গে অন্যান্য প্রসিকিউটররাও উপস্থিত থাকবেন। অন্যদিকে, পলাতক আসামি শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন এবং কারাবন্দি আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ শুনানিতে অংশ নেবেন।
উল্লেখ্য, ১৬ জুন ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে আত্মসমর্পণের জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন। সাত দিনের সময়সীমা শেষ হলেও তারা হাজির না হওয়ায় রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবীর মাধ্যমেই অভিযোগ গঠনের শুনানি পরিচালিত হয়।
এ মামলায় গত ১ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়, যেখানে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি পৃথক অভিযোগে তিনজনকে অভিযুক্ত করা হয়।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত আদালতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এটি ছিল প্রথম মামলা। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলার কার্যক্রম চলমান, যার একটি গুম-খুন সংক্রান্ত, অপরটি মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে গণহত্যা নিয়ে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সূত্র বলছে, গত বছরের গণ-অভ্যুত্থান দমনে সরকার ও তার অনুগত বাহিনীগুলোর বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে। এসব অভিযোগের বিচার চলছে ট্রাইব্যুনালের আওতায়।
পাঠকের মন্তব্য