![]()
দক্ষিণ এশিয়ার প্রবৃদ্ধি কমছে; বাংলাদেশের জিডিপি ৩৬ বছরের সর্বনিম্ন পর্যায়ে
বিশেষ প্রতিনিধি
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতা এবং অভ্যন্তরীণ কাঠামোগত দুর্বলতার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্য চাপে রয়েছে। বিশ্বব্যাংকের Bangladesh Development Update (এপ্রিল ২০২৫) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৩.৩ শতাংশে নেমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে, যা গত ৩৬ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট ও বর্তমান চ্যালেঞ্জ
প্রবৃদ্ধির ধারা: FY23–এ ৫.৮% → FY24–এ ৪.২% → FY25 পূর্বাভাস ৩.৩%।
বিনিয়োগে স্থবিরতা: রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও ঋণ ব্যয় বৃদ্ধির কারণে বেসরকারি বিনিয়োগ কমেছে।
মুদ্রাস্ফীতি চাপ: ক্রমাগত উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি ক্রয়ক্ষমতা ও শিল্প উৎপাদনকে প্রভাবিত করছে।
দারিদ্র্যের ঝুঁকি বৃদ্ধি: ২০২৫ সালে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ অতিদারিদ্র্যে পতিত হতে পারে।
আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও অর্থায়ন
বিশ্বব্যাংক:
$৫০০ মিলিয়ন বাজেট সহায়তা (জুন ২০২৫) – সরকারি খাতের স্বচ্ছতা ও আর্থিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য।
$৮৫০ মিলিয়ন নতুন চুক্তি (এপ্রিল ২০২৫) – কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বাণিজ্য উন্নয়ন ও অবকাঠামো উন্নত করার লক্ষ্যে।
IMF: মে ২০২৫–এ $১.৩ বিলিয়ন ছাড়ের অনুমোদন দিয়েছে, যা মুদ্রানীতি ও সংস্কার বাস্তবায়নে সহায়তা করবে।
মূল ঝুঁকি ও প্রতিবন্ধকতা
রাজনৈতিক ও নীতিগত অস্থিরতা
আর্থিক খাতের ভঙ্গুরতা ও অনাদায়ী ঋণ
আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানির চাহিদা হ্রাস
অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংগ্রহে অদক্ষতা ও প্রশাসনিক অচলাবস্থা
সম্ভাবনা ও করণীয়
রাজস্ব নীতি আধুনিকীকরণ – কর নেট সম্প্রসারণ ও ডিজিটাল ট্যাক্স প্রশাসন
বেসরকারি বিনিয়োগ সক্রিয়করণ – সুদের হার নীতি ও নীতিগত স্থিতিশীলতা
বাণিজ্য বহুমুখীকরণ – আঞ্চলিক ও নতুন আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ
কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতিতে প্রযুক্তি সংযোজন – কর্মসংস্থান ও খাদ্য নিরাপত্তা বাড়াতে
মধ্যমেয়াদি পূর্বাভাস
সূচক:জিডিপি প্রবৃদ্ধি
FY25 (পূর্বাভাস):৩.৩%
FY26-FY27 (সম্ভাবনা): ৪.৫% – ৫%
সূচক: মুদ্রাস্ফীতি
FY25 (পূর্বাভাস):উচ্চ
FY26-FY27 (সম্ভাবনা) :ধীরে ধীরে কমতে পারে
সূচক: রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত
FY25 (পূর্বাভাস):নিম্ন
FY26-FY27 (সম্ভাবনা) :বৃদ্ধি পেতে পারে
সূচক: কর্মসংস্থান
FY25 (পূর্বাভাস):দুর্বল
FY26-FY27 (সম্ভাবনা) :ধীরে উন্নতি হবে
বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে জটিল সংকটকাল অতিক্রম করছে। তবে সাহসী সংস্কার, সুশাসন, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং অভ্যন্তরীণ নীতি স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা গেলে আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে প্রবৃদ্ধি পুনরুদ্ধার সম্ভব।