সূত্র: সময় টিভি
সংরক্ষণ করতে না পারায় কৃষকেরা উৎপাদিত পচন ধরা আলু বস্তায় বস্তায় ফেলে দিচ্ছেন ময়লার ভাগাড়ে। লোকসানের কারণে ঋণের পাল্লা ভারী হওয়ায় দুশ্চিন্তায় এখন কৃষকরা। এ অবস্থায় কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কোন ধরনের পরামর্শ না পাওয়ার অভিযোগ কৃষকের। আর কৃষি বিভাগ বলছেন, কৃষকরা আলু সংরক্ষণের অভাবে দাম না পেলেও, নষ্ট হয়নি আলু।
অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি আলু উৎপাদনে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন ঠাকুরগাঁও জেলার কৃষকরা। তেমনি এবার এ জেলায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। উৎপাদনের শুরুর দিকে কৃষকরা কিছু আলু বিক্রি করতে পারলেও হিমাগারে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় সংরক্ষণ নিয়ে পড়েছেন বিপাকে।
জেলা সদরের ঢোলারহাট, আঁকচা ও নারগুনসহ বেশকয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, প্রান্তিক কৃষকেরা উৎপাদন খরচ তুলতে বাড়ি কিংবা আশপাশে সেড নির্মাণ করে সংরক্ষণ করছেন আলু। তবে দুই মাস পার না হতেই পচন ধরেছে আলুতে। এ অবস্থায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক।
আলুর হিমাগারে কোটা বাণিজ্য, বঞ্চিত স্থানীয় কৃষকরা।
কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, প্রতি বিঘা জমিতে আলু উৎপাদনে ৭০-৮০ হাজার টাকা খরচ হলেও এখন ২০ হাজার টাকাও মিলছে না আলু বিক্রি করে। আলু রাখার জায়গা না পেয়ে বাড়ির পাশে সেড তৈরি করে আলু সংরক্ষণের চেষ্টা করলেও তা পচে যাচ্ছে।
এখন পচা আলু ফেলে দেয়ার জায়গাও মিলছে না অভিযোগ করে চাষিরা বলেন, যে যেভাবে পারছে আলু ফেলে দিচ্ছে। এতে দুর্গন্ধে চলাফেরাও কঠিন হয়ে গেছে। কৃষি বিভাগ কোন উদ্যোগ নেয়নি সংরক্ষণে। তাই উপায় না পেয়ে কৃষকরা এখন দিশেহারা।
স্থানীয়রা বলছেন, এক সময় কৃষকের উৎপাদিত আলু বিদেশে পাঠানো হলেও এখন দেশের আলু দেশেই পচে যাচ্ছে। শুধু মাত্র সংরক্ষণের অভাবে। সে কারণে কৃষকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে ময়লার ভাগাড়ে কিংবা যত্রতত্র ফেলে দিচ্ছে।
আলু ব্যবসায়ী খোরশেদ আলম, আবু রায়হানসহ অনেক ব্যবসায়ী জানান, কৃষকের উৎপাদিত আলু সংরক্ষণে বা সরকারের পক্ষ থেকে রফতানিতে ভূমিকা না রাখার কারণেই এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে আগামীতে এমন পরিস্থিতি নিরসনে কার্যত।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক মো. মাজেদুল ইসলাম জানান, আলু নষ্ট বা পচে গেছে এমন খবর জানা নেই। তবে আলু সংরক্ষণের বিষয়ে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
কৃষি বিভাগের তথ্য বলছে, গত মৌসুমে ২৭ হাজার হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। এর বিপরীতে সাড়ে ৮ লাখ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হয়েছে। আর জেলায় হিমাগারের সংখ্যা ১৭ টি। এসব হিমাগারের ধারণ ক্ষমতা দেড় লাখ মেট্রিক টন।