![]()
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা ও মেয়েকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় পলাতক গৃহকর্মী আয়েশাকে অবশেষে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঝালকাঠি এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে তিনি গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
পরিচয় গোপন, প্রযুক্তিহীন পালানো—তবু শেষ পর্যন্ত ধরা
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আয়েশা নিজের আসল নাম ও ঠিকানা গোপন করে চাকরিতে যোগ দেন। বাসায় কাজ নেওয়ার সময় তার সঙ্গে কোনো মোবাইল ফোন ছিল না এবং পরে যে ফোনটি নিয়ে যান তা বাসা থেকে বের হওয়ার পরই বন্ধ করে ফেলেন।
এ ছাড়া আশপাশের অধিকাংশ সিসিটিভি ক্যামেরা অচল থাকায় তার চলাচলের পথ নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। বোরকা পরে থাকায় ভবনের কার্যকর ক্যামেরাগুলোতেও তার মুখ সুস্পষ্টভাবে ধরা পড়েনি। ফলে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে বিভিন্ন সূত্র ধরে তাকে শনাক্ত করার চেষ্টা চালায় পুলিশ।
সূত্র আরও জানায়, নিহত লায়লা আফরোজের পরিবারের সঙ্গে আয়েশার আগের কোনো ফোন যোগাযোগের তথ্য মেলেনি।
ঘটনার বিবরণ
গত সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে মোহাম্মদপুরের বাসায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তার মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করে পালিয়ে যান আয়েশা।
ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী—
-
সকাল ৭:৫১ মিনিটে কাজের জন্য বাসায় প্রবেশ করেন আয়েশা,
-
সকাল ৯:৩৫ মিনিটে নাফিসার স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে বেরিয়ে যান, সঙ্গে নিয়ে যান একটি মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিস।
সুরতহাল প্রতিবেদনে দেখা যায়, লায়লা আফরোজের শরীরে প্রায় ৩০টি ছুরিকাঘাত, আর নাফিসার শরীরে ৪টি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
মা–মেয়ে দুজনকে নৃশংসভাবে হত্যার পর সোমবার রাতে আয়েশার বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন নিহত লায়লা আফরোজের স্বামী, স্কুলশিক্ষক আ জ ম আজিজুল ইসলাম।
মরমান্তিক বিদায়
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) জোহরের নামাজের পর জানাজা শেষে তাদের গ্রামের বাড়ি নাটোর পৌরসভার দক্ষিণ বড়গাছায় পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়। এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।