• হোম > বিদেশ > ভারত–বাংলাদেশ সম্পর্ক আরও ভবিষ্যৎমুখী হোক: প্রণয় বর্মা

ভারত–বাংলাদেশ সম্পর্ক আরও ভবিষ্যৎমুখী হোক: প্রণয় বর্মা

  • মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:২৪
  • ৩০

---

ঢাকায় আয়োজিত ‘মৈত্রী দিবস’-এর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় বর্মা। তিনি জানিয়েছেন—ভারত চায় সমতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা, আস্থা ও পারস্পরিক সহায়তার ভিত্তিতে একটি স্থিতিশীল, ইতিবাচক ও ভবিষ্যৎমুখী সম্পর্ক। এই সম্পর্কের প্রধান ভিত্তি হবে দুই দেশের সাধারণ মানুষ; তাদের আশা, তাদের সংগ্রাম, তাদের স্বপ্ন।

৬ ডিসেম্বর ১৯৭১—এই দিনেই ভারত বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল সময়, রক্তঝরা ইতিহাস, লাখো মানুষের ত্যাগ আজও দুই দেশের সম্পর্কে এক মানবিক সংযোগের ভূমি তৈরি করে। সেই ঐতিহাসিক দিনের আবহেই ভারতীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয় ‘মৈত্রী দিবস’—আর সেই মঞ্চ থেকেই প্রণয় বর্মা ভবিষ্যতের নতুন প্রত্যাশার কথা জানান।

“দুই দেশের মানুষেরাই হবে সম্পর্কের মূল ভিত্তি”

হাইকমিশনার প্রণয় বর্মা বলেন,
“সমতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি স্থিতিশীল, ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক চায় ভারত। এই সম্পর্কে দুই দেশই যাতে একে অপরের সহায়ক হতে পারে—সেই লক্ষ্যেই কাজ করতে চাই আমরা।”
তিনি আরও বলেন,
“এই সম্পর্কের কেন্দ্রে থাকবে দুই দেশের সাধারণ মানুষ, তাদের আকাঙ্ক্ষা ও তাদের ভবিষ্যৎ।”

তার বক্তব্যে স্পষ্ট—রাজনৈতিক পরিবর্তন যাই ঘটুক, দুই দেশের জনগণের ঐতিহাসিক বন্ধন অটুট থাকবে, এবং ভারত সেই সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে চায়।

ঐতিহাসিক স্মৃতির দিন—মৈত্রী দিবস

১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কাছে চিঠি লিখে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের স্বীকৃতি চান। দুই দিন পর, অর্থাৎ ৬ ডিসেম্বর ভারত প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
সেই কারণেই ৬ ডিসেম্বর দুই দেশের সম্পর্কের ইতিহাসে এক অমলিন দিন—একটি দিন যা মুক্তিযোদ্ধা, শরণার্থী, সাধারণ মানুষের চোখের জল ও বীরত্বের গল্প বহন করে।

২০২১ সালে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নেন যে ৬ ডিসেম্বর ‘মৈত্রী দিবস’ হিসেবে পালন করা হবে। দিল্লি, ঢাকা ছাড়াও বিশ্বের বহু দেশে দিনটি একসঙ্গে উদযাপন করা হয়।

বর্তমান রাজনৈতিক আবহকে কেন্দ্র করে প্রণয় বর্মার মন্তব্যের তাৎপর্য

মোহাম্মদ ইউনুসের সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করার অভিযোগ উঠেছে—বিশেষত জামাতের ভূমিকা ঘিরে নতুন বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। দেশের ভেতর রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার এবার ৬ ডিসেম্বর মৈত্রী দিবস পালন করেনি।

এমন প্রেক্ষাপটে ভারতীয় হাইকমিশনারের বক্তব্য কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয়—বরং দুই দেশের সম্পর্ক ও মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক সত্যের প্রতি একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত।

“যৌথ ত্যাগ ও যৌথ ভবিষ্যৎ—সেই পথেই আমরা হাঁটতে চাই”

প্রণয় বর্মা বলেন,
“৬ ডিসেম্বর এমন এক মাইলফলক যা কখনও মুছে যাবে না। অতীতের যৌথ ত্যাগ ও ভবিষ্যতের নতুন আকাঙ্ক্ষাকে সামনে রেখে ভারত ও বাংলাদেশ আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে।”

তার বক্তব্যে উঠে আসে মানবিক মূল্যবোধ—স্বাধীনতার লড়াই থেকে শুরু করে বর্তমানের সহযোগিতা পর্যন্ত সবকিছুর কেন্দ্রে রয়েছে সাধারণ মানুষ।


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/7616 ,   Print Date & Time: Wednesday, 17 December 2025, 05:25:32 AM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh