![]()
সাত কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আন্দোলনে থাকা সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা আবারও অনড় অবস্থান জানিয়েছেন। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথে থাকবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবার সকালে শিক্ষা ভবনের পেছনের অংশে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। টানা কর্মসূচিতে ক্লান্ত হলেও শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন—এ আন্দোলন তাদের ভবিষ্যৎ, তাই আপোষের সুযোগ নেই।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, রাতভর অবস্থান নিয়ে তারা সেখানে অবস্থান করেছেন। মানবিক পরিস্থিতি কঠিন হলেও লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন থেকে সরে আসবেন না।
আন্দোলনে থাকা এক শিক্ষার্থী বলেন,
“আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। রাতেও আমরা এখানেই ছিলাম। সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত না এলে আমরা আন্দোলন থেকে সরে যাব না।”
আরেক শিক্ষার্থী সুমাইয়া তাহমিন বলেন,
“যৌক্তিক দাবির জন্যই আমরা রাজপথে নেমেছি। আমাদের দাবি মানতেই হবে। না হলে আমরা রাজপথ ছাড়ব না।”
শিক্ষার্থীদের এই দৃঢ় অবস্থান শুধু দাবি আদায়ের সংগ্রাম নয়, বরং তাদের শিক্ষাজীবন ও ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগের প্রতিফলন। বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর চাওয়া শিক্ষার্থীদের মতে, সাত কলেজের প্রশাসনিক জটিলতা, সেশনজট, অব্যবস্থাপনা এবং শিক্ষা কার্যক্রমে বারবার বিঘ্ন তাদের উচ্চশিক্ষার মানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ফলে সমস্যা সমাধানের কোনো সুস্পষ্ট উদ্যোগ না দেখে তারা রাস্তায় নেমেছেন।
গতকাল রোববার সকালেও সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে শিক্ষা ভবন মোড়ে অবস্থান নেন। দুপুরের দিকে তারা শিক্ষা ভবনের সামনের সড়কে অবস্থান নেন এবং পরে বিকেলে হাইকোর্ট মোড় অবরোধ করেন। এতে প্রেস ক্লাব, গুলিস্তান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সচিবালয়মুখী যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, দুর্ভোগে পড়ে সাধারণ মানুষও।
তবুও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান—মানবিক চাপ ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা তাদের উদ্দেশ্য নয়, বরং তারা বাধ্য হয়ে এমন কঠিন অবস্থান নিতে বাধ্য হয়েছেন।
রাতের দিকে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা জানান, সাত কলেজ নিয়ে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত তারা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। তাদের ভাষায়, “এটাই হয়তো আমাদের ভবিষ্যতের একমাত্র পথ।”
শিক্ষার্থীদের দাবি, সমস্যার সমাধানে সরকার দ্রুত, স্পষ্ট ও কার্যকর সিদ্ধান্ত নেবে—এটাই তাদের প্রত্যাশা। মানবিক সংকটের এই মুহূর্তে তাদের আহ্বান—শিক্ষাজীবন রক্ষার এই সংগ্রামে যেন দেরি না হয়।