![]()
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গঠন ও শপথ গ্রহণ সম্পূর্ণ বৈধ—হাইকোর্টের দেওয়া ঐতিহাসিক এই রায় বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের এই সিদ্ধান্তে অন্তর্বর্তী সরকারের সাংবিধানিক অবস্থান আরও সুস্পষ্ট হলো, যা দেশের চলমান রাজনৈতিক উত্তরণ প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে।
রবিবার সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপিল খারিজ করে দেন। আদালত এ সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন, যা এখনো প্রকাশ করা হয়নি। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পরই এই পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।
আদালতের রায়—দেশের রাজনৈতিক স্থিতি বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত
আজ সকাল পৌনে ১০টার দিকে আদালত রায় ঘোষণা করেন। আদালতে উপস্থিত আইনজীবী, সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মাঝে রায় ঘোষণার মুহূর্তে বিশেষ আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়। অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিশ্চিত হওয়ায় রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে এই রায়কে অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন।
হাইকোর্টের আগের রায়ে বলা হয়েছিল—
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আইনসম্মত নথিপত্র দ্বারা সমর্থিত এবং জনগণের সামগ্রিক ইচ্ছায় গঠিত। সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ ও মতামতের ভিত্তিতেই সরকার গঠন ও শপথ গ্রহণ যৌক্তিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
আপিল বিভাগও মূলত এই সিদ্ধান্তকেই বহাল রাখল।
বৈধতা চ্যালেঞ্জকারী আইনজীবীর আবেদনের পরিণতি
গত ১৩ জানুয়ারি আইনজীবী মুহাম্মদ মহসেন রশিদ অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন ও শপথ গ্রহণের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট আবেদন করেন। হাইকোর্ট তা সরাসরি খারিজ করে দেন। পরে তিনি আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করেন, যা আজ খারিজ হয়েছে।
আজকের শুনানিতে আবেদনকারীর পক্ষে স্বয়ং তিনি নিজেই যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন—
-
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান,
-
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।
এ ছাড়া ইন্টারভেনার হিসেবে আদালতে অংশ নেন—
-
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল,
-
শরীফ ভূঁইয়া,
-
মোহাম্মদ শিশির মনির,
-
শাহরিয়ার কবির।
তাদের সবাই আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন এবং হাইকোর্টের রায় বহাল রাখার পক্ষে মত দেন।
জাতীয় পরিপ্রেক্ষিত—একটি রায়, বহুপ্রত্যাশিত স্থিতি
রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে উত্তরণ প্রক্রিয়ার যে পথ বাংলাদেশ অতিক্রম করছে, সেই সময়ে এই রায় দেশের জনগণের কাছে স্থিতিশীলতার বার্তা হিসেবে দেখা দিচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই রায় দেশের প্রশাসনিক ধারাবাহিকতা ও জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধারে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা—
অন্তর্বর্তী সরকার যে দায়িত্ব পেয়েছে, তা যেন স্বচ্ছতা, শান্তি ও স্থিতিশীলতার ভিত্তিতে দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পথ নির্ধারণে সহায়ক হয়।