• হোম > Following > অর্থনৈতিক সম্মেলনে দেশের শীর্ষ নীতিনির্ধারকরা

অর্থনৈতিক সম্মেলনে দেশের শীর্ষ নীতিনির্ধারকরা

  • শনিবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৩৭
  • ২৩

---

দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি, আর্থিক খাতের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা এবং রাজনৈতিক অঙ্গীকারের গুরুত্ব তুলে ধরতে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের গ্র্যান্ড বলরুমে উন্মোচিত হলো ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্মেলন ২০২৫’। শনিবার (২৯ নভেম্বর) সকাল ১০টায় শুরু হওয়া এই সম্মেলনে এক ছাদের নিচে উপস্থিত হয়েছেন দেশের আর্থিক খাতের নীতিনির্ধারক, শীর্ষ রাজনীতিবিদ, গবেষক, উদ্যোক্তা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা।

২০২০ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে আয়োজিত এই সম্মেলন দেশের অর্থনীতিকে নতুন আলোচনার পরিমণ্ডলে নিয়ে এসেছে। চতুর্থবারের মতো আয়োজিত এবারের আয়োজনের প্রতিপাদ্য— ‘অর্থনীতির ভবিষ্যৎ পথরেখা ও রাজনৈতিক অঙ্গীকার’— যা দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক পুনর্গঠন ও দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনার জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

দৈনিক বণিক বার্তা-র সম্পাদক ও প্রকাশক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। ব্যবসা, বিনিয়োগ ও সামষ্টিক অর্থনীতির মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে ঘিরে আয়োজিত এই সেশনে আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন—

  • বিআইডিএস মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. এ কে এনামুল হক,

  • হা-মীম গ্রুপের চেয়ারম্যান এ কে আজাদ,

  • বিএসএমএ সভাপতি ও জিপিএইচ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম,

  • এবিবি চেয়ারম্যান ও সিটি ব্যাংকের এমডি মাসরুর আরেফিন।

উদ্বোধনী সেশনে বক্তারা বলেন, দেশের ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ, ব্যাংকিং খাতের সংকট নিরসন, বিনিয়োগে স্বচ্ছতা, নীতি ধারাবাহিকতা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছাড়া অর্থনীতির টেকসই অগ্রগতি সম্ভব নয়। তারা আশা প্রকাশ করেন—এ সম্মেলনের আলোচনাগুলো ভবিষ্যতের নীতিনির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।


দ্বিতীয় অধিবেশন: অর্থনীতির গণতান্ত্রিকীকরণ

দ্বিতীয় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও অভিজ্ঞ অর্থনীতিবিদ আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

এই অধিবেশনে বক্তারা বলেন—গণতন্ত্র, জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা ছাড়া অর্থনৈতিক কাঠামো কখনোই শক্তিশালী হতে পারে না। অর্থনীতির সুফল যেন সমাজের সব শ্রেণির মানুষের কাছে পৌঁছায়, তা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়া হয়।


তৃতীয় অধিবেশন: অর্থনীতিতে ন্যায্যতা

এ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন জামায়াতে ইসলামের আমির ডা. শফিকুর রহমান। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সাবেক সিনিয়র সচিব মো. শফিউল্লাহ।

বক্তারা বলেন—ন্যায্য অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে তুলতে হলে অসম বণ্টন কমাতে হবে, কৃষি–শিল্প–সেবা—সব খাতে সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের উন্নয়নই দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ভিত্তি।


সমাপনী অধিবেশন: অভ্যুত্থানের অর্থনৈতিক আকাঙ্ক্ষা

সমাপনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। সম্মানিত আলোচকদের মধ্যে ছিলেন—

  • ড. বদিউল আলম মজুমদার, প্রধান নির্বাহী, সুজন

  • নাহিদ ইসলাম, আহ্বায়ক, জাতীয় নাগরিক পার্টি

  • জোনায়েদ সাকি, প্রধান সমন্বয়কারী, গণসংহতি আন্দোলন

এ অধিবেশনে দেশের রাজনৈতিক পরিবর্তন, গণঅভ্যুত্থান এবং অর্থনৈতিক প্রত্যাশার সংযোগ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। বক্তারা বলেন—যে কোনো রাজনৈতিক উত্তরণকে সফল করতে হলে জনগণের অর্থনৈতিক প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে এবং উন্নয়নকে হতে হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক।


মুক্ত আলোচনায় নতুন চিন্তা ও প্রস্তাব

সারা দিনের একাধিক সেশনে দেশের শীর্ষ ব্যাংকার, ব্যবসায়ী নেতা, বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানের প্রধান, অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও নীতিনির্ধারকরা মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন।
তারা ব্যাংকিং খাতের সুশাসন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বৈদেশিক মুদ্রার স্থিতি, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ এবং তরুণ উদ্যোক্তা তৈরির বিষয়ে বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন।

একটি মানবিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি গড়ে তুলতে সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তাও বক্তাদের আলোচনায় উঠে আসে বারবার।


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/7274 ,   Print Date & Time: Monday, 1 December 2025, 12:40:20 AM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh