![]()
বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাম্প্রতিক এক শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম ও আসামি সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানের আইনজীবী নাজনীন নাহারের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। শুনানির একপর্যায়ে তাজুল ইসলাম নাজনীন নাহারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “চুপ থাকুন, কথা বলবেন না, আপনাকেও আসামি করা হতে পারে।” আদালতেই দেওয়া এ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
আইনজীবী নাজনীন নাহার অভিযোগ করেন, তার মক্কেলকে সেফ হাউজে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে নিয়ম বহির্ভূতভাবে এবং তাকে বিষয়টি জানানো হয়নি। পাশাপাশি গুম–সংক্রান্ত কমিশনের সদস্য নাবিলা ইদ্রিসের উপস্থিতি নিয়েও আপত্তি জানান তিনি। নাজনীন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের সময় নাবিলা ইদ্রিস আসামিকে হুমকি দিয়েছিলেন—“আপনার মেয়েকে এতিম হয়ে যেতে হবে।”
শুনানিতে অভিযোগ আসে, তদন্ত প্রক্রিয়ায় নিয়ম লঙ্ঘন হয়েছে এবং জিজ্ঞাসাবাদ অবৈধভাবে রেকর্ড করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন চিফ প্রসিকিউটর, যার পরই বিতর্কিত মন্তব্যটি উঠে আসে।
ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার এসময় চিফ প্রসিকিউটরকে স্মরণ করিয়ে দেন যে তিনি একজন আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলছেন ও আদালতের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে।
ঘটনাটি নিয়ে সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান মন্তব্য করেছেন, আদালতে এমন হুমকির কোনো স্থান নেই। তিনি বলেন, এটি ২০১৩ সালে জামায়াতের আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাককে হুমকি দেওয়ার ঘটনার কথা মনে করিয়ে দেয়। একইসঙ্গে তিনি জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিও দেখতে ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। অন্যদিকে আইনজীবী নাজনীন নাহারও আদালতের প্রতি সম্মান দেখিয়ে ঘটনাটি নিয়ে বিস্তারিত বলতে চাননি।
মানবাধিকার কর্মী ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, আদালতে এমন ঘটনা কাম্য না হলেও কখনো–সখনো ঘটে এবং সাধারণত বিচার প্রক্রিয়ায় এর প্রভাব পড়ে না।