![]()
বাংলাদেশের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যখন নানা আলোচনা চলছে, ঠিক সেই সময়ে জার্মানি আশা প্রকাশ করেছে যে এবারের নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য এবং সর্বোপরি অংশগ্রহণমূলক। বুধবার (২৬ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত ‘ডিক্যাব টক’ অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন ঢাকায় নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লোটজ।
রাষ্ট্রদূত বলেন,
“আমরা আশা করছি—বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন এমন হবে, যেখানে প্রত্যেক ভোটার নিরাপদে, স্বাধীনভাবে এবং বাধাহীনভাবে ভোট দিতে পারবেন।”
তিনি আরও যুক্ত করেন, “একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ও অগ্রগতিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখে।”
ভোটার উপস্থিতি বাড়বে—জার্মানির প্রত্যাশা
ড. লোটজ প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া ৬০ শতাংশ ভোটদানের সম্ভাবনা সম্পর্কেও ইতিবাচক মন্তব্য করেন। তিনি বলেন,
“আমরা মনে করি ভোটারদের অংশগ্রহণ আগের তুলনায় বেশি হবে। এতে জনগণের আস্থা ও রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তির মান আরও উন্নত হবে।”
একই সঙ্গে তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন—
“প্রচার-প্রচারণার সময় সহিংসতা অবশ্যই কমতে হবে। গণতান্ত্রিক চর্চা টিকিয়ে রাখতে সহিংসতা শূন্যের কোঠায় আনতে হবে।”
রাজনীতিতে আস্থা ফিরিয়ে আনার গুরুত্ব
জার্মান রাষ্ট্রদূতের মতে, নির্বাচন কেবল ভোট গ্রহণের একটি প্রক্রিয়া নয়—এটি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের অন্যতম বড় সুযোগ। রাজনৈতিক অস্থিরতা বা সহিংসতা ওই আস্থাকে দুর্বল করে দেয়। তিনি বলেন,
“অংশগ্রহণ যত বেশি হবে, নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতাও তত বাড়বে। এ কারণে আমরা চাই নির্বাচনী পরিবেশ শান্তিপূর্ণ হোক।”
ডিক্যাব টকের আয়োজন
ডিক্যাব সভাপতি একে এম মঈনুদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান মামুন। তাঁরা বাংলাদেশের নির্বাচন, গণমাধ্যমের ভূমিকা, আন্তর্জাতিক নজরদারি ও কূটনৈতিক সম্পর্কের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
ডিক্যাব নেতাদের মতে, বিদেশি কূটনৈতিকদের মন্তব্য ও পর্যবেক্ষণ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ করতে উৎসাহিত করে।
নির্বাচনকে ঘিরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রত্যাশা
সম্প্রতি বিভিন্ন দেশ—বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র—নির্বাচনী পরিবেশ উন্নয়ন, সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ ও মানবাধিকার সুরক্ষার বিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে আসছে। জার্মানিও সেই ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে আজকের আলোচনায় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নিজস্ব অবস্থান তুলে ধরল।
আন্তর্জাতিক মহলের মতে, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অঞ্চল। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেশের অর্থনীতি, রপ্তানি, উন্নয়ন সহায়তা এবং কূটনৈতিক সম্পর্ককে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করবে।