![]()
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (বিআইপিএসএস)-এর সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) এ এন এম মুনিরুজ্জামান বলেছেন, দ্বিপক্ষীয় প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় ভারত প্রায় আইনগতভাবেই ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে বাধ্য।
ঢাকায় বে অব বেঙ্গল কনভারসেশনের একটি অধিবেশনে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে ভারতের একটি প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে। সেই চুক্তি অনুযায়ী ভারত আইনগতভাবেই তাকে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য।
তিনি আরও বলেন, বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী হিসেবে ভারতের উচিত বাংলাদেশের আইনগত প্রক্রিয়াকে সম্মান জানিয়ে বিলম্ব ছাড়াই হাসিনাকে ফেরত পাঠানো।
মুনিরুজ্জামান জানান, যদি ভারত আন্তর্জাতিক নিয়ম-কানুন, নীতি ও শৃঙ্খলাকে সম্মান করে, তবে তাদের বাংলাদেশের আইন ব্যবস্থা ও বিচারিক প্রক্রিয়ার প্রতিও সম্মান দেখানো উচিত। তার মতে, হাসিনার বিচার আন্তর্জাতিক আইনগত মানদণ্ড পূরণ করেছে এবং প্রতিবেশী দেশের উচিত এই প্রক্রিয়াকে মর্যাদা দেওয়া।
তিনি প্রশ্ন তোলেন—যদি বাংলাদেশ দণ্ডিত ভারতীয় নাগরিকদের আশ্রয় দিত এবং আনুষ্ঠানিক অনুরোধ সত্ত্বেও ফেরত পাঠাতে অস্বীকৃতি জানাত, তবে ভারত কী প্রতিক্রিয়া দেখাত? তার মতে, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী অন্য দেশের আইনে দণ্ডিত ব্যক্তিকে ফেরত পাঠানোই ন্যায্য।
‘ফ্র্যাকচার্ড অর্ডার্স, ফ্লুইড লয়্যালটিজ : পাওয়ার পলিটিক্স ইন দ্য পোস্ট-অ্যালাইনমেন্ট এজ’ শীর্ষক অধিবেশনে বিভিন্ন দেশের নীতি বিশ্লেষক ও শিক্ষাবিদরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনার সঞ্চালনা করেন জার্মানির আরটিএল নর্ড-এর ডেভিড প্যাট্রিশিয়ান।
এদিকে শেখ হাসিনার প্রথম প্রত্যর্পণ অনুরোধ এখনও নিষ্পত্তি হয়নি, যদিও নয়াদিল্লি আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে। সাম্প্রতিক রায়ের পর বাংলাদেশ ভারতকে মানবতা–বিরোধী অপরাধে দণ্ডিত শেখ হাসিনা এবং প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে দ্রুত হস্তান্তরের আহ্বান জানিয়েছে।
গত ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ গত বছরের জুলাই–আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত নৃশংসতার দায়ে তাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, মানবতা–বিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের অন্য দেশে আশ্রয় দেওয়া হবে ‘অমিত্রসুলভ’ আচরণ এবং ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।