• হোম > বাংলাদেশ > বিদেশে থাকা বাংলাদেশিদের জন্য পোস্টাল ব্যালট

বিদেশে থাকা বাংলাদেশিদের জন্য পোস্টাল ব্যালট

  • বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫, ১৪:২৯
  • ৪৪

---

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রথমবারের মতো বিদেশে থাকা বাংলাদেশি নাগরিকদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন কার্যকর ও মানবিক উদ্যোগ হিসেবে আইটি-সমর্থিত পোস্টাল ব্যালট ব্যবস্থার আনুষ্ঠানিক নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এই উদ্যোগকে অনেকেই প্রবাসী ভোটারদের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার অবসান এবং ভোটের অধিকারকে সর্বজনীন করার এক বড় উপলক্ষ হিসেবে দেখছেন।

বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপসচিব মনির হোসেন স্বাক্ষরিত বিস্তারিত পরিপত্রে নিবন্ধন, যাচাইকরণ, ব্যালট পাঠানো, ভোট প্রদান এবং ফলাফল চূড়ান্তকরণ পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়াটি স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা হয়। পরিপত্র অনুযায়ী, প্রবাসী ভোটাররা ‘Postal Vote BD’ মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে অনলাইনে নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন, যা ডিজিটাল বাংলাদেশ উদ্যোগের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রবাসীদের ভোটে অংশগ্রহণকে সহজ, নিরাপদ ও স্বচ্ছ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

স্বাক্ষর মিল না থাকলে ব্যালট বাতিল—নির্বাচনের স্বচ্ছতার অংশ

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, প্রবাস থেকে ডাকযোগে আসা প্রতিটি ব্যালট খাম খোলার পর রিটার্নিং অফিসার প্রথমেই ঘোষণাপত্রে ভোটারের স্বাক্ষর সঠিক আছে কি না তা যাচাই করবেন।
স্বাক্ষর যাচাইয়ের এই ধাপটি নির্বাচন প্রক্রিয়ার নিরাপত্তা ও বৈধতা নিশ্চিত করার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ঘোষণাপত্রে যথাযথ স্বাক্ষর না থাকলে, ব্যালট খাম খোলার আগেই সেটিকে বাতিল হিসেবে সংরক্ষণ করা হবে।

এটি একদিকে যেমন জালিয়াতি প্রতিরোধ করবে, অন্যদিকে প্রকৃত ভোটারের ভোটাধিকারকে নিরাপদ রাখবে—যা একটি স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিতের ক্ষেত্রে অপরিহার্য।

‘Postal Vote BD’ মোবাইল অ্যাপ—প্রবাসী ভোটারদের জন্য নতুন দিগন্ত

ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো নির্বাচনে বিদেশে থাকা বাংলাদেশিরা অনলাইনে নিবন্ধন করে ডাকযোগে ব্যালট পাবেন।
এই অ্যাপের মাধ্যমে—

  • নিজস্ব তথ্য যাচাই

  • আসনের তালিকা দেখা

  • প্রার্থীদের নাম–প্রতীক জানা

  • ভোট দেওয়ার নির্দেশনা পাওয়া

  • ব্যালট পাঠানোর অগ্রগতি ট্র্যাক করা
    সবকিছুই এক জায়গায় দেখা যাবে।

এটি প্রবাসীদের জন্য যেন দেশে ভোট দেওয়ার একটি ভার্চুয়াল সেতুবন্ধন।
প্রবাসজীবনের ব্যস্ততা, দূরত্ব ও সময়ের সীমাবদ্ধতার মধ্যেও তারা দেশের ভবিষ্যত গঠনে অংশ নিতে পারবেন—এটি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ এক অন্তর্ভুক্তিমূলক উদ্যোগ।

ডাক বিভাগের মাধ্যমে ব্যালট প্রেরণ—দেশের সঙ্গে আবেগের যোগাযোগ

নিবন্ধন সম্পন্ন হলে ডাক বিভাগ ভোটারের বিদেশের ঠিকানায় সরাসরি ব্যালট পাঠাবে। প্রতীক বরাদ্দের পর ভোটার ব্যালটে চিহ্ন দিয়ে ফিরতি খামে ডাকযোগে পাঠাবেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কাছে।

এই পদ্ধতির মাধ্যমে এক ধরনের মানবিক সংযোগ তৈরি হয়—
দূর দেশে থাকলেও দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা, অংশগ্রহণ ও নাগরিকত্বের অনুভূতি আরও গভীর হয়।

পোস্টাল ব্যালটের সময়সীমা নির্ধারণ

নির্বাচন কমিশন পোস্টাল ব্যালটে ভোটদানের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা ঘোষণা করেছে, যাতে বিদেশে থাকা ভোটাররা যথেষ্ট সময় পান নিবন্ধন, ব্যালট গ্রহণ, ভোট প্রদান এবং ফেরত পাঠানোর জন্য।

প্রবাসীদের মানবিক বাস্তবতা বিবেচনায় এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা প্রায় এক কোটি প্রবাসী বাংলাদেশি দীর্ঘদিন ধরে ভোটাধিকারের সীমাবদ্ধতায় ভুগছিলেন। অনেকেই ভোটদানের সময় দেশে আসতে পারেন না কাজ, ভিসা, টিকিট খরচ কিংবা সময়ের চাপে।

এই বাস্তবতা বিবেচনা করেই নির্বাচন কমিশনের এই আইটি-সমর্থিত পোস্টাল ব্যালট ব্যবস্থা প্রবাসীদের জন্য মানবিকতার আলো জ্বালিয়ে দিয়েছে—
“দেশ থেকে দূরে থাকলেও, ভোটে আর দূরে থাকা নয়।”

নাগরিক অধিকার অন্তর্ভুক্তি, প্রযুক্তির ব্যবহার এবং প্রবাসীদের প্রতি রাষ্ট্রের দায়িত্ববোধ মিলিয়ে এটি একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/6970 ,   Print Date & Time: Wednesday, 26 November 2025, 08:47:45 AM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh