
দেশের বিভিন্ন ডিজিটাল ও ইলেকট্রনিক প্ল্যাটফর্মে পলাতক ও দণ্ডিত আসামিদের দেওয়া বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা বক্তব্য প্রচারের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি (এনসিএসএ)। একই সঙ্গে এসব প্রচার অবিলম্বে বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
সোমবার রাতে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এনসিএসএ জানায়, গত এক সপ্তাহ ধরে চলমান এই ধরনের মিথ্যা প্রচারণা জাতীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং এখনও তা অব্যাহত রয়েছে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, কিছু ডিজিটাল ও ইলেকট্রনিক মাধ্যম এমন ঘৃণামূলক ও জাতিগত বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচার করছে, যা সহিংসতা উসকে দিচ্ছে, জনমনে অস্থিরতা তৈরি করছে এবং ব্যাপক বিশৃঙ্খলা বা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করছে।
এনসিএসএ আরও জানায়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। ১৭ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে ঘোষিত ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায়ে দুটি অভিযোগে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
সংস্থাটি বলছে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত, ক্ষমতাচ্যুত ও পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য ও বিবৃতি প্রচার দেশের সামাজিক স্থিতিশীলতাকে (সোশ্যাল হারমনি) ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এসব বক্তব্যে সহিংসতার আহ্বান থাকায় তা সহিংসতা, নাশকতা ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে প্ররোচনা দিচ্ছে বলেও উল্লেখ করা হয়।
সাইবার সিকিউরিটি অর্ডিন্যান্স ২০২৫-এর ২৬(১) ধারায় বলা হয়েছে—কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে, জেনেবুঝে বা ভুয়া পরিচয়ে সাইবার জগতে প্রবেশ করে ঘৃণামূলক বক্তব্য প্রকাশ বা প্রচার করলে, যা সহিংসতা বা জনউদ্বেগ সৃষ্টি করে, অথবা বিশৃঙ্খলা বা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে নির্দেশনা দেয়—তা অপরাধ বলে গণ্য হবে।
২৬(২) ধারায় বলা হয়েছে—এই অপরাধ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ দুই বছর কারাদণ্ড, সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে।
এনসিএসএ সতর্ক করে বলেছে, প্রয়োজন হলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা এসব অবৈধ বক্তব্য অপসারণ, ব্লক বা স্থানান্তরের ব্যবস্থা নিতে পারে। এনসিএসএ মহাপরিচালকের মাধ্যমে এসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রয়োজনে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকেও (বিটিআরসি) সহায়তার জন্য অনুরোধ করা যেতে পারে।