![]()
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজন আসামির বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণা করবে।
এই পাঁচটি অভিযোগ হলো—
১. উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান:
২০২৪ সালের ১৪ জুলাই শেখ হাসিনা এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে উল্লেখ করে উত্তেজনাকর বক্তব্য দেন। তদন্তে বলা হয়েছে, এই বক্তব্যের প্ররোচনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সশস্ত্র আওয়ামী কর্মীরা নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর ব্যাপক আক্রমণ চালায়।
২. প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের নির্মূলের নির্দেশ:
অভিযোগে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা হেলিকপ্টার, ড্রোন এবং প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের হত্যা ও নির্মূলের নির্দেশ দেন। এই নির্দেশ বাস্তবায়নে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ভূমিকা রাখেন।
৩. রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা:
আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডে তিন আসামির বিরুদ্ধে প্ররোচনা, উসকানি, ষড়যন্ত্র, সহায়তা ও সম্পৃক্ততার অভিযোগ আনা হয়েছে।
৪. রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় ছয় আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা:
গত বছরের ৫ আগস্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে ছয়জন নিহত হওয়ার ঘটনায় আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যার নির্দেশ ও সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে।
৫. আশুলিয়ায় ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যা:
জীবিত একজনসহ মোট ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যার নির্দেশ, উসকানি, সহায়তা ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এই মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও আসামি করা হয়েছে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানকে পলাতক দেখানো হয়েছে, আর মামুন একমাত্র গ্রেপ্তার আসামি হিসেবে আদালতে রাজসাক্ষী দিয়েছেন।
এ বছরের ১২ মে তদন্ত সংস্থা চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। মামলায় মোট ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন—আন্দোলনকারী, আহত ব্যক্তি, প্রত্যক্ষদর্শী, চিকিৎসকসহ। এছাড়া শেখ হাসিনার অডিও-ভিডিও বক্তব্য, সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন ও জব্দ করা গুলি প্রমাণ হিসেবে জমা দেওয়া হয়েছে।