
বাংলাদেশি তরুণদের জন্য রন্ধনশিল্প এখন শুধু পেশা নয়, আন্তর্জাতিক কর্মসংস্থানের পথও খুলছে। দেশের ন্যাশনাল হোটেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (এনএইচটিটিআই) ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো—যেমন খলিল কালিনারি আর্টস সেন্টার, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব কালিনারি আর্টস, শেফ’স টেবিল অ্যাকাডেমি—প্রতি বছর হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে বেকারি, ফুড প্রোডাকশন, ফ্রন্ট অফিস, হাউসকিপিং এবং কুলিনারি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
এই প্রশিক্ষণ শুধু রান্নার দক্ষতা নয়, বরং শৃঙ্খলা, পরিচ্ছন্নতা, সময়নিষ্ঠা এবং সফট স্কিলও শেখাচ্ছে, যা বিদেশে কাজের জন্য অপরিহার্য। উদাহরণস্বরূপ, লন্ডনে কম্পিউটার সায়েন্সে ভর্তি সাদিক নিশাত খলিল কালিনারি আর্টসের তিন মাসের প্রশিক্ষণ শেষ করে ‘ফুড অ্যান্ড বেভারেজ’-এ খণ্ডকালীন কাজ করছেন। মেহনাজ রহমানের মতো শিক্ষার্থীরা দুবাই বা অন্যান্য দেশে ইন্টার্নশিপ শেষে দেশে ফিরে উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়ে তুলছেন।
দেশের রন্ধনশিল্প প্রশিক্ষণ ধারা এতোটাই প্রসারিত হয়েছে যে প্রতি বছর প্রায় ৮,০০০ শিক্ষার্থী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কোর্স শেষ করছেন, যার ৩০-৪০ শতাংশই মালয়েশিয়া, দুবাই, কাতার ও ইউরোপের মতো দেশে কর্মসংস্থান পাচ্ছেন। সরকারের স্বীকৃত প্রশিক্ষণ ও আন্তর্জাতিক মানের বেসরকারি কোর্সের মাধ্যমে শেফরা এখন দক্ষ অভিবাসনের নতুন দিগন্ত তৈরি করছে।
তবে চ্যালেঞ্জও রয়েছে—অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নেই, দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের খরচ অনেকের জন্য চ্যালেঞ্জ। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বৃত্তি ও সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে সমস্যাগুলো সমাধান করা সম্ভব।
শেষমেষ, খলিলুর রহমানের কথায়,
“রান্না শেখানো মানে শুধু চাকরি দেওয়া নয়, বরং স্বাধীনভাবে চলার পথ তৈরি করা।”
বাংলাদেশি শেফরা এইভাবে শুধু দেশের জন্য নয়, আন্তর্জাতিক বাজারেও নিজেদের দক্ষতা প্রতিষ্ঠা করছে।