![]()
ঠিক এক বছর আগে মার্কিন রাজনীতিতের কথা প্রায় কেউই জানতেন না। কিন্তু, এক বছর পর তিনি শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই নন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও বেশ আলোচিত।
একদিকে, জোহরান মামদানি এখন মহাক্ষমতাধর মার্কিন প্রেসিডেন্টর কারণ, অন্যদিকে তিনি নিউইয়র্কের বহু স্বল্প আয়ের মানুষের ‘ভরসা’র স্থান।
আজ মঙ্গলবার নিউইয়র্কের তথা মার্কিন রাজনীতিতে ঘটতে যাচ্ছে এক অভূতপূর্ব ঘটনা। বিশ্ববাণিজ্যের কেন্দ্রভূমি হিসেবে সমাদৃত নিউইয়র্ক মহানগরীর মেয়র পদে তিনি লড়ছেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী হয়ে। নির্বাচিত হলে তিনি হবেন সেই নগরীর প্রথম মুসলিম ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত মেয়র।
বিশাল নিউইয়র্ক নগরীর বাসিন্দাদের জন্য জোহরান মামদানি যে প্রতিশ্রুতি নিয়ে আসেন তা ছিল—’এই শহর ধনী-গরিব সবার জন্য বাসযোগ্য করতে চাই’।
শুধু তাই নয়, তিনি সরকারি বাসা ভাড়া না বাড়ানোর পাশাপাশি সবার জন্য বিনা খরচে বাসে চলাচলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ ছাড়াও আছে শিশুদের জন্য বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা।
জোহরান মামদানি এসব প্রতিশ্রুতি নিয়ে নগরবাসীর কাছে যান। এসব বিষয়ে তিনি তাদের আশ্বস্ত করেন। নগরীর সব বাসিন্দার কাছে যেন তার প্রতিশ্রুতিগুলো পৌঁছায় তা নিশ্চিত করতে তিনি সমাজমাধ্যমে জোরদার প্রচারণা চালান।
এরপর তিনি তার স্বেচ্ছাসেবকের সংখ্যা বাড়াতে থাকেন। এই স্বেচ্ছাসেবকরা আরও বেশি মানুষের কাছে জোহরান মামদানির প্রতিশ্রুতি পৌঁছে দেন। ধীরে ধীরে তার স্বেচ্ছাসেবকের সংখ্যা এক লাখের কাছাকাছি হয়ে যায়।
তবুও নিরবচ্ছিন্ন প্রচারণা চালিয়ে যেতে থাকেন জোহরান মামদানি। নগরীর বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন ও বাণিজ্যিক সংস্থার সঙ্গে ক্রমাগত আলোচনা চালিয়ে যান। এমনকি, ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর কাছে তিনি যান ‘সাম্য ও স্বাধীনতা’র বাণী নিয়ে। জোহরান মামদানি ঘোষণা দেন যে, তিনি নির্বাচিত হলেদূর করতেও কাজ করবেন।
নিজ নগরীর বাসিন্দাদের নিজস্ব সমস্যার পাশাপাশি চলমান আন্তর্জাতিক ইস্যু বিশেষ করে গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন জোহরান মামদানি। নির্বাচিত হলে তিনি ইসরায়েলে বিনিয়োগ বন্ধের চেষ্টা করবেন বলেও জানিয়েছেন।
এসব প্রতিশ্রুতির কারণে জোহরান মামদানির জনপ্রিয়তা বেড়ে যাওয়ায় দেশটির রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প তাকে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্পের নেতিবাচক বক্তব্যে জোহরান মামদানি বিচলিত না হওয়ায় তার প্রতি জনসমর্থন ক্রমাগত বাড়তে থাকে।
বিরোধীদের প্রচারণার বিরুদ্ধে জোহরান মামদানি নিজের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলোকে আরও জোরেশোরে প্রচার করতে থাকেন। তিনি তার স্বেচ্ছাসেবকদের উদ্দেশে বলেছেন নির্বাচনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রচারণা চালিয়ে যেতে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তরুণ ভোটারদের মধ্যে ৩৪ বছর বয়সী জোহরান মামদানির জনপ্রিয়তা তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুয়োমো ও কার্টিস স্লিওয়ার তুলনায় অনেক বেশি। শুধু তাই নয়, অন্য বয়সের স্বল্প আয়ের মানুষেরাও জোহরান মামদানির মধ্যে আশার আলো দেখছেন। অনেকেই জোহরান মামদানির নির্বাচনী কৌশলকে ‘মামদানি ম্যাজিক’ হিসেবেও আখ্যা দিচ্ছেন।