![]()
ফ্রান্সের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত জ্যঁ-মার্ক সেরে-শারলে বলেছেন, বাংলাদেশের বিমান খাত এখন এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে এবং এ সময় এয়ারবাস বাংলাদেশের বিমান খাতের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হতে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীতে ফ্রান্স–জার্মান যৌথ দূতাবাসে আয়োজিত “ইউরোপীয় সংলাপ : বাংলাদেশের বিমান খাতের প্রবৃদ্ধি” শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান সংযোগের প্রয়োজন ও কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থান—এই দুই মিলে দেশটিকে আঞ্চলিক বিমান চলাচলের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। এ প্রেক্ষাপটে বিমানের জন্য এয়ারবাস একটি সমন্বিত ও প্রতিযোগিতামূলক প্রস্তাব দিয়েছে, যা বাংলাদেশের বিমান খাতের রূপান্তরে সহায়তা করবে।”
সভায় জার্মান রাষ্ট্রদূত রুডিগার লোটজ, ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলারসহ ইউরোপীয় কূটনীতিক ও বিমান খাতের সাংবাদিকরা অংশ নেন। তারা এয়ারবাসের ইতিবাচক ভূমিকা ও বাংলাদেশের বিমান শিল্পের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন।
ফরাসি রাষ্ট্রদূত বলেন, “বিমানের বহরে এয়ারবাস যুক্ত হলে প্রতিষ্ঠানটি আরও নমনীয়, টেকসই ও প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠবে—যা ইতিমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন বিমান সংস্থা প্রমাণ করেছে।”
তিনি জানান, এয়ারবাসের প্রস্তাবের পেছনে ইউরোপের চারটি দেশের দৃঢ় সমর্থন রয়েছে। “আমাদের রপ্তানি ঋণ সংস্থাগুলো (Export Credit Agencies) এই চুক্তিতে সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করেছে,” বলেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত আরও জানান, ফ্রান্স ও ইউরোপ বাংলাদেশের বিমান খাতের সামগ্রিক উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি অংশীদার হিসেবে কাজ করতে চায়। এতে থাকবে পাইলট ও ইঞ্জিনিয়ার প্রশিক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম, শিল্প দক্ষতা হস্তান্তর এবং বিমানের মানবসম্পদ উন্নয়ন।
তিনি বলেন, “আমাদের মূল বার্তা হচ্ছে—আমরা একসাথে কাজ করতে চাই। বাংলাদেশ যখন আঞ্চলিক বিমান চলাচলে একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে, ইউরোপ সেই যাত্রায় অংশীদার হতে আগ্রহী।”
নবনিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত সম্প্রতি বাংলাদেশে এসে আনুষ্ঠানিকভাবে তার দায়িত্বগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি বলেন, “দশকের পর দশক ধরে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহযোগিতার ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে ফ্রান্স–বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক।”
তিনি আরও বলেন, “ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বাংলাদেশের অবস্থান দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার সংযোগস্থলে, যা ফ্রান্স ও ইউরোপের সঙ্গে সহযোগিতার অসীম সম্ভাবনা তৈরি করেছে।”
রাষ্ট্রদূতের ভাষায়, “এই যৌথ আকাঙ্ক্ষা ও অংশীদারিত্বের প্রেক্ষাপটেই এয়ারবাস বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ফ্রান্স ও ইউরোপ এর সম্পূর্ণ সমর্থন জানায়।”
তিনি বলেন, “ইউরোপীয় ঐতিহ্য, উদ্ভাবনী চিন্তা ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের প্রতীক হিসেবে এয়ারবাস বাংলাদেশের বিমান খাতকে এগিয়ে নিতে একটি টেকসই ও দূরদর্শী পছন্দ হতে পারে।”