জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলায় পরপর তিন ধার্য তারিখে সাক্ষী হাজির করতে না পারায় প্রসিকিউশনের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “গত তিনটি ধার্য তারিখে সাক্ষী উপস্থাপন করতে প্রসিকিউশন ব্যর্থ হয়েছে। এটি তাদের দায়িত্বহীনতারই প্রতিফলন।”
‘প্রসিকিউশনের দায়িত্ব সাক্ষী হাজির করা, তাতে তারা ব্যর্থ’
দুলু বলেন,
“আইনের একটি মৌলিক নীতি হলো প্রিন্সিপাল অব ন্যাচারাল জাস্টিস। এর অধীনে আদালতে কোনো পক্ষ কোনো আবেদন করলে, তার অনুলিপি অপরপক্ষকে সরবরাহ করতে হয়। কিন্তু গত তিনটি তারিখে সাক্ষী হাজিরের সময় বাড়ানোর আবেদন দিলেও আমরা কোনো নথি পাইনি। এরপরও সাক্ষী আদালতে হাজির হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “প্রসিকিউশনের মূল দায়িত্ব হলো আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করা, আর এর অন্যতম প্রক্রিয়া সাক্ষী উপস্থাপন করা। কিন্তু তারা তা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। আদালত থেকে সাক্ষীদের নোটিশ বা সমন পাঠানো ঠিকমতো হয়েছে কি না, সেটিও পরিষ্কার নয়। তবে এর দায়ভার পুরোপুরি প্রসিকিউশনের।”
আবু সাঈদ হত্যা মামলার অগ্রগতি
মঙ্গলবার ছিল মামলার ১০ম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ। তবে সাক্ষী না আসায় শুনানি পিছিয়ে আগামী ১০ নভেম্বর নতুন দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
এই মামলায় মোট ৩০ জন আসামি রয়েছেন। এদের মধ্যে ৬ জন গ্রেপ্তার এবং ২৪ জন পলাতক।
গ্রেপ্তার ছয়জন হলেন—
১️এএসআই আমির হোসেন,
২️বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম,
৩️কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়,
৪️ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী,
৫️রাফিউল হাসান রাসেল,
৬️আনোয়ার পারভেজ।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি হাসিবুর রশীদ এ মামলার অন্যতম আসামি এবং বর্তমানে পলাতক।
মামলার প্রেক্ষাপট
গত ২৭ আগস্ট সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এর আগে ৬ আগস্ট ৩০ আসামির বিরুদ্ধে ফর্মাল চার্জ (আনুষ্ঠানিক অভিযোগ) গঠন করে ট্রাইব্যুনাল বিচার শুরুর আদেশ দেয়।
পলাতক আসামিদের পক্ষে গত ২২ জুলাই সরকারি খরচে চারজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়।
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম প্রস্তাব:
-
“আবু সাঈদ হত্যা মামলায় সাক্ষী না আসায় ফের পেছাল শুনানি”
-
“প্রসিকিউশনের ব্যর্থতা দাবি আসামিপক্ষের আইনজীবীর”
-
“তিন ধার্য তারিখেও সাক্ষী হাজির হয়নি ট্রাইব্যুনালে”