
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার নির্বাচনী প্রস্তুতি জোরদার করেছে। নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়, সেজন্য সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার সম্পূর্ণরূপে নির্বাচনকেন্দ্রিক। নিরাপত্তা ও সমন্বয় পরিকল্পনা ইতোমধ্যেই বাস্তবায়নের পর্যায়ে রয়েছে।’
নির্বাচন উপলক্ষে মোট ৭ লাখ ৬৮ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য—পুলিশ, বিজিবি, আনসার ও ভিডিপি—বিশেষ প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। এর মধ্যে
- ১ লাখ ৫০ হাজার পুলিশ সদস্যকে নয়টি বিশেষ প্রশিক্ষণ মডিউলের আওতায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে,
- ৫ লাখ ৮৫ হাজার আনসার ও ভিডিপি সদস্য ভোটকেন্দ্রভিত্তিক দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন—যাদের মধ্যে ১ লাখ ৩৫ হাজার সশস্ত্র এবং ৪ লাখ ৫০ হাজার নিরস্ত্র সদস্য।
প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে গড়ে ১৩ জন নিরাপত্তা সদস্য দায়িত্বে থাকবেন।
এ ছাড়া ৩৩ হাজার বিজিবি সদস্য (১,১০০ প্লাটুন) নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করছেন, যা ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সব প্রশিক্ষণ ২০২৬ সালের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে শেষ হবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও জানান, নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ৮০ হাজার সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ হিসেবে মাঠে থাকবে। নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিশেষ অভিযানও চালানো হচ্ছে।
ভোটকেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সিসিটিভি ক্যামেরা ও বডিওর্ন ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে। পাশাপাশি প্রতিটি জেলা ও পুলিশ সদরদপ্তরে নির্বাচন কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘গণমাধ্যমের ওপর কোনো বিধিনিষেধ থাকবে না। সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে নির্বাচন কাভার করতে পারবেন। পর্যবেক্ষকদেরও যথাযথ অনুমোদন দেওয়া হবে।’
নির্বাচনকালীন সময়ে সারাদেশে মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স প্রস্তুত থাকবে, যাতে যেকোনো নিরাপত্তাজনিত ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
এছাড়া নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা জোরদারে নতুন করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ১০ হাজার ২৬৪ পুলিশ সদস্য, ২ হাজার ১৪৫ আনসার ও ভিডিপি সদস্য, ৫ হাজার ৫১৩ বিজিবি সদস্য এবং ৬৩৪ কোস্ট গার্ড সদস্য।