• হোম > রাজনীতি > আরপিও সংশোধনীতে ১২ দলীয় জোটের আপত্তি

আরপিও সংশোধনীতে ১২ দলীয় জোটের আপত্তি

  • সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৬:২৫
  • ৪৮

---

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আবারও উত্তাপ ছড়িয়েছে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনী নিয়ে। সংশোধিত প্রস্তাব অনুযায়ী— জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশ নিলেও প্রতিটি দলকে নিজ নিজ দলীয় প্রতীকেই ভোটে অংশ নিতে হবে।
এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ১২ দলীয় জোট তীব্র আপত্তি জানিয়েছে।

সোমবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে গিয়ে জোটপ্রধান ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বরাবর লিখিতভাবে আপত্তিপত্র জমা দেন।


জোটের দাবি: “প্রতীক বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা গণতান্ত্রিক অধিকার”

চিঠিতে মোস্তফা জামাল হায়দার উল্লেখ করেন,

“আরপিওর ২০ নম্বর অনুচ্ছেদে জোটগত নির্বাচনে বলা হয়েছে— প্রার্থী জোটের হলেও তাকে নিজের দলের প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। আমরা এ পরিবর্তনের তীব্র বিরোধিতা করছি।”

তিনি বলেন,

“এর আগে বহুবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোট গঠন করে অন্য দলের প্রতীক ব্যবহার করা হয়েছে। এতে কখনো বিশৃঙ্খলা বা আইনি জটিলতা সৃষ্টি হয়নি। এখন হঠাৎ করে এই পদ্ধতি পরিবর্তনের যৌক্তিকতা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।”

জোটের পক্ষ থেকে আরও অভিযোগ করা হয়েছে— সরকারের উচ্চ পর্যায় ও ইসির সঙ্গে আলোচনাকালে আশ্বস্ত করা হয়েছিল যে ২০ নম্বর অনুচ্ছেদে কোনো পরিবর্তন আনা হবে না, অথচ হঠাৎ পত্রিকায় নতুন প্রস্তাবের খবর প্রকাশিত হয়েছে।


১২ দলীয় জোটের সদস্য দলগুলো:

বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), জাতীয় দল, বাংলাদেশ জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, নয়া গণতান্ত্রিক পার্টি, ইসলামিক পার্টি, প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী দল এবং ইউনাইটেড লিবারেল পার্টি।


“গণতন্ত্রে প্রতীক নির্বাচন জোটের অধিকার”

মোস্তফা জামাল হায়দার আরও বলেন,

“জোট গঠনের উদ্দেশ্যই হচ্ছে নির্বাচনে জয়লাভ করা। তাই প্রতীক নির্বাচনের স্বাধীনতা থাকাটা রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার। এই প্রচলিত প্রক্রিয়া পরিবর্তন করলে জোট রাজনীতিই সংকটে পড়বে।”

তিনি আরও সতর্ক করেন,

“সংস্কারের দোহাই দিয়ে যদি ভিন্ন কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা হয়, তাহলে তা কোনো রাজনৈতিক দলই মেনে নেবে না।”


বিশ্লেষণ: আরপিও সংশোধনী ঘিরে নতুন রাজনৈতিক উত্তাপ

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে,
আরপিও সংশোধনীটি কার্যকর হলে বড় জোটগুলো যেমন বিএনপি বা জাতীয় পার্টি নেতৃত্বাধীন সমন্বিত প্রচারণা চালাতে পারবে না, তেমনি ছোট দলগুলোর ভোট প্রভাবও আরও কমে যাবে।
এটি জোট রাজনীতির উপর একটি প্রাতিষ্ঠানিক চাপ তৈরি করতে পারে, যা দেশের দীর্ঘদিনের নির্বাচনী সংস্কৃতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।


মানবিক দৃষ্টিকোণ:

বাংলাদেশের গণতন্ত্রের অন্যতম ভিত্তি হলো জোট রাজনীতি— যেখানে বড় দলগুলো ছোট দলগুলোর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতীয় নীতিনির্ধারণে অংশ নেয়।
কিন্তু নতুন আরপিও সংশোধনী বাস্তবায়িত হলে সেই রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তি ও অংশগ্রহণের পথ সংকুচিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।


প্রেক্ষাপট:

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) বাংলাদেশের নির্বাচনী আইন, যা প্রার্থী, দল, প্রচারণা ও ভোটগ্রহণ সংক্রান্ত নিয়ম নির্ধারণ করে। এর কোনো পরিবর্তন সরাসরি প্রভাব ফেলে নির্বাচনী প্রতিযোগিতা ও গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণে।


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/6275 ,   Print Date & Time: Wednesday, 26 November 2025, 09:05:59 AM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh