যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ঘোষণা দিয়ে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার অবিলম্বে শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ ও বিভ্রান্তি তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নির্দেশ শীতল যুদ্ধের সময়কার পারমাণবিক প্রতিযোগিতার পুনরুত্থান ঘটাতে পারে এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা সংকটকে আরও তীব্র করতে পারে।
গত বৃহস্পতিবার, মার্কিন নৌবাহিনীর ভাইস অ্যাডমিরাল রিচার্ড কোরেল, যিনি স্ট্র্যাটেজিক কমান্ড (স্ট্র্যাটকম) কমান্ডার হিসেবে মনোনীত হয়েছেন, সিনেটে তাঁর শুনানিতে অংশ নেন। তিনি জানান, ট্রাম্পের নির্দেশের প্রকৃত অর্থ পরিষ্কার নয়—এটি কি পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহ ব্যবস্থার পরীক্ষা নাকি বিস্ফোরক পরীক্ষার অনুমোদন। “আমি প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্য নিশ্চিতভাবে জানি না, তবে এটি এমন একটি ব্যাখ্যা হতে পারে,” বললেন কোরেল।
ট্রাম্পের বক্তব্য ও যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অবস্থান
ট্রাম্প উল্লেখ করেছেন,
“পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া বর্তমানে দ্বিতীয় এবং চীন তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে, তবে দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।”
মার্কিন বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প প্রায়ই সমঝোতায় আসতে বাধ্য করার কৌশল হিসেবে শক্তি প্রদর্শন করেন। এই নির্দেশের মধ্য দিয়ে তিনি মস্কো ও বেইজিংকে সতর্কবার্তা পাঠাতে চেয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থল, নৌ ও বায়ুসেনা সামরিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে পারমাণবিক অস্ত্রের নির্ভরযোগ্যতা পরীক্ষা ও প্রস্তুতি মূলত উন্নত কম্পিউটার সিমুলেশন দ্বারা চালানো হয়। বাস্তব বিস্ফোরক পরীক্ষার পুনঃপ্রবর্তন যৌক্তিক ও নিরাপদ নয়, সতর্ক করেছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।
বিশ্বের প্রতিক্রিয়া ও প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি
রাশিয়া ও চীনের পক্ষ থেকেও শক্ত প্রতিক্রিয়া এসেছে। ক্রেমলিনের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, যদি কোনো দেশ পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা শুরু করে, মস্কোও পরীক্ষা করবে। চীন বারবার এই বিষয়ে আলোচনায় অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক পরীক্ষার স্থগিতাদেশ মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, নতুন পারমাণবিক পরীক্ষা আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তারা মনে করছেন, পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার পুনরায় সূচনা মানবিক ও রাজনৈতিক দিক থেকে বিপজ্জনক।
মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি
এই পদক্ষেপ শুধু রাজনৈতিক বা সামরিক প্রতিযোগিতা নয়, বিশ্বের মানুষের জন্য নিরাপত্তা ও শান্তির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক শান্তি নিশ্চিত করতে সকল দেশের প্রতি আহ্বান, পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা ও উত্তেজনা কমানো।