• হোম > বিদেশ > বাংলাদেশে সবুজ টেক্সটাইল বিপ্লবে চীনের সহায়তার অঙ্গীকার

বাংলাদেশে সবুজ টেক্সটাইল বিপ্লবে চীনের সহায়তার অঙ্গীকার

  • বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৪:০১
  • ৫৮

---

বাংলাদেশের বস্ত্র ও পোশাক শিল্পকে আরও পরিবেশবান্ধব ও টেকসই করার লক্ষ্যে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ-চায়না গ্রীন টেক্সটাইল এক্সপো ২০২৫। রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) তিন দিনব্যাপী এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত বলেন,

“চীন বাংলাদেশকে বস্ত্র শিল্পে সবুজ রূপান্তরকে উৎসাহিত করতে সহায়তা করতে প্রস্তুত। উভয় দেশ মিলে টেকসই সবুজ শিল্পশৃঙ্খল গড়ে তুলতে চায়।”

তিনি আরও বলেন,

“চীন ও বাংলাদেশ যৌথভাবে পরিবেশবান্ধব বস্ত্র যন্ত্রপাতি, ডিজিটাল মুদ্রণ এবং স্মার্ট ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ খুঁজছে।”

চীনের রাষ্ট্রদূত জানান, চীন টানা ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার হিসেবে কাজ করছে। বর্তমানে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। শুধুমাত্র গত বছরের আগস্টের পর থেকে ২০টিরও বেশি চীনা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের সঙ্গে নতুন বিনিয়োগ চুক্তি করেছে, যার পরিমাণ প্রায় ৫৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

ইয়াও ওয়েন বলেন,

“চীন বাংলাদেশের সঙ্গে তার অংশীদারত্বকে অত্যন্ত মূল্যবান মনে করে। বাংলাদেশের শতভাগ শুল্কযোগ্য পণ্যের ওপর শুল্কমুক্ত সুবিধা ইতোমধ্যে দেওয়া হয়েছে এবং এ নীতিটি ২০২৮ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।”

তিনি আরও যোগ করেন, “চীন শুধু বিনিয়োগে নয়, বরং মানবিক উন্নয়ন ও পরিবেশ রক্ষায়ও বাংলাদেশকে পাশে দেখতে চায়। সবুজ প্রযুক্তির এই সহযোগিতা হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক টেকসই প্রতিশ্রুতি।”


প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারীরা

এই গ্রীন টেক্সটাইল এক্সপোতে অংশ নিচ্ছেন চীন ও বাংলাদেশের শীর্ষ উদ্যোক্তা, গবেষক ও প্রযুক্তিবিদেরা। আয়োজকেরা জানিয়েছেন, এখানে থাকছে—

  • পরিবেশবান্ধব ও পুনর্ব্যবহারযোগ্য টেক্সটাইল প্রযুক্তির প্রদর্শন,

  • ব্যবসা-টু-ব্যবসা (B2B) মিটিং,

  • বিশেষজ্ঞ সেমিনার ও প্যানেল আলোচনা।

প্রদর্শনী প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এবং এটি চলবে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত।


বিশেষ অতিথিরা

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন:

  • বিজিএমইএ-এর সহসভাপতি (অর্থ) মিজানুর রহমান,

  • বিটিএমসি চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস. এম. জাহিদ হাসান,

  • বিসিসিসিআই সভাপতি মো. খোরশেদ আলম,

  • সিইএবি সভাপতি হান কুন।

তাঁরা বলেন, টেক্সটাইল শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণ। এখন এই শিল্পের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো পরিবেশ সুরক্ষা ও টেকসই উৎপাদন। চীনের সহযোগিতা এই রূপান্তরকে গতি দেবে এবং বাংলাদেশকে সবুজ পোশাক শিল্পের বিশ্বনেতা হতে সহায়তা করবে।


মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে

এই প্রদর্শনীর মূল বার্তা শুধু প্রযুক্তি নয়— এটি একটি মানবিক প্রতিশ্রুতিরও বহিঃপ্রকাশ। কারখানার শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত কর্মপরিবেশ, পানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী উৎপাদন পদ্ধতি, এবং বর্জ্য পুনর্ব্যবহারযোগ্য করার উদ্যোগগুলো বাংলাদেশে “সবুজ অর্থনীতি”র একটি নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে।

টেক্সটাইল খাত বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের ৮৪ শতাংশেরও বেশি জোগান দেয়। এই খাত যদি পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিতে রূপান্তরিত হয়, তবে তা দেশের অর্থনীতি ও মানবিক উন্নয়ন— দুই দিকেই ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের “সবুজ বিপ্লব” শুরু হয়েছে এই প্রদর্শনী থেকেই।


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/5840 ,   Print Date & Time: Wednesday, 26 November 2025, 05:15:58 AM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh